৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে অবস্থিত স্টার লাইন স্প্রাউট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতেই উৎসবের আমেজটা টের পাওয়া গেল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক আর আমন্ত্রিত অতিথিদের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে গোটা স্কুল ক্যাম্পাস। শীতের হিম হিম বিকালে উৎসবের আমেজে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির মৌ মৌ গন্ধে আর নজরকাড়া সমাহারে বিমোহিত দর্শনার্থীরা। আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে স্টার লাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে আয়োজিত হয়ে গেল পিঠা উৎসব।

উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান। তিনি ফেনীর মানুষকে বাঙালী সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পিঠা উৎসব আয়োজনের প্রশংসা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিক ও মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো খুবই জরুরি। তবে দেশের বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পাসের হার বাড়লেও শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে বিকশিত হচ্ছে না।

তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ও শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা জরুরী। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানী, নৈতিক ও চরিত্রবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

ফেনী ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সন্তোষ রঞ্জন নাথের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসকের সহধর্মীনি সেলিনা আক্তার ববি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো: গোলাম জাাকারিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্যাহ, ফেনী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার প্রমুখ।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্টার লাইন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জাফর উদ্দিন, পরিচালক মাহমুদুল হক চৌধুরী মুনির ও মাঈন উদ্দিন।

গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জাফর উদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীদের বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রতি বছরই শীতের শুরুতে আমরা স্কুলে পিঠা উৎসব করে থাকি। বাঙালি ঐতিহ্যগত কারণে শীতের ঋতুর সঙ্গে পিঠার যোগসূত্র আছে। তাই শীতকে আমরা বরণ করে নিই এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে। তাছাড়া পিঠা উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মিলনমেলা তৈরি হয়।

স্টলগুলো ঘুরে দেখা যায়, উৎসবে ১৫টি স্টলে বাহারি পিঠার সমাহার নিয়ে হাজির ছিল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। পিঠার নামের তালিকাও বেশ লম্বা। ভাপা, মুকশুলি, মসুর পাকন, চিকেন পুলি, দুধ পুলি, নারিকেল পুলি, গোলাপ ফুল পিঠা, আলুর পাকন পিঠা, বিবিআনা পিঠা, নারিকেল বিস্কুট পিঠা, বো টাই পিঠা, তেল পিঠা, ডিম সুন্দরী পাটিসাপটা, পাটিসাপটা, আনারকলি, দুধসাগর এবং চিতই পিঠা।

উৎসবে আসা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাথে সাথে বিভিন্ন স্টল ঘুরে সবার সঙ্গে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। পিঠাগুলোর দাম ছিল শিক্ষার্থীদের আমাদের সাধ্যের মধ্যে। 

একই অনুষ্ঠানে স্টার লাইন গ্রুপের পক্ষ থেকে দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, দৈনিক স্টার লাইন সম্পাদক জামাল উদ্দিন, অজেয় বাংলা সম্পাদক শওকত মাহমুদের পক্ষে পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূঞা ও দৈনিক নয়াপয়গাম সম্পাদক এনামুল হক পাটোয়ারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।