গতবছর কুরবানি ঈদে ফেনীর পশু বাজারে গরু এনে ভাল লাভ গুণেছিলেন। তাই গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ১৫টি গরু নিয়ে ফেনী এসেছিলেন। তবে এবার বাড়তি আয়ের পরিবর্তে প্রাণ হারিয়ে শাহজালালের নিথর দেহ কিশোরগঞ্জ ফিরে যাচ্ছে। ঘটনার বিহ্বলতায় ফেনীতে থাকা স্বজন ও সফরসঙ্গীদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।

এ্যাম্বুলেন্সের পাশে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন নিহত শাহজালালের চাচাতো ভাই আল আমিন

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাত আড়াইটার দিকে গরু নিয়ে ফেনীর সুলতানপুর এসে পৌঁছালে গরুসহ ট্রাকের গতিরোধ করে স্থানীয় ফেনী পৌর ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম ও তার সহযোগিরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে তারা। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা দেখালে মারধর শুরু করে কালাম ও তার সহযোগিরা। শোর চিৎকার শুনে ওই এলাকায় থাকা স্বজনরা বেরিয়ে এলে তাদের গায়েও হাত তুলে কালাম। এক পর্যায়ে কালাম শাহজালাল (৩০) বুকে গুলি করে। মুহুর্তে যেন পরিস্থিতি বদলে যায়। স্বজন ও সঙ্গীরা প্রাণভয়ে দুরে সরে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী শাহজালালের চাচাতো ভাই আল আমিন ও তার স্ত্রী সুমি আক্তার এভাবেই ঘটনার বর্ণনা করেন।

আজ সকালে সকালে ওই এলাকার একটি পুকুর থেকে শাহজালালের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কাউন্সিলর কালামকে প্রধান আসামী করে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার করার কথা নিশ্চিত করেছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন। এর মধ্যে সাগর নামে একজন আসামী গ্রেফতার রয়েছে। পুলিশ কালামের বাড়ি হতে রক্তমাখা পাঞ্জাবী উদ্ধার করেছে এবং দুটি মটর সাইকেল জব্দ করেছে।

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে আজকেই কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার সাগুলি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শাহজালালকে। চিরচেনা সে পথ-প্রান্তর আর জলাধারের পাশ ধরে শাহজালাল নিথর দেহ জন্মভিটায় ফিরে যাচ্ছে।