দাগনভূঞার বেকের বাজার দক্ষিণ নেয়াজপুর বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তফার বিরুদ্ধে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) নির্ধারিত তারিখে ঋণ নিতে এসে তালাবদ্ধ অফিসকক্ষ দেখতে পান ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। পরে সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফাকে কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৭ সালে এলাকার স্থানীয় কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ নেয়াজপুর বহুমুখী সমবায় সমিতি (রেজি নং-৬১) নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। স্থানীয় লোকজনকে গ্রাহক বানিয়ে দৈনিক, মাসিক ও এককালীন বিনিয়োগ নেওয়া শুরু করেন প্রতিষ্ঠানটি।
বুচিপুর এলাকার গ্রাহক শাহীনা আক্তার পাখি জানান, গত ২০ আগস্ট ২০ লাখ টাকা ঋণ দিবে বলে মো. মোস্তফা আমার কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা জামানত নেন। মঙ্গলবার দুপুরে অফিসে গিয়ে তালা লাগানো দেখতে পেয়েছি। তার মুঠোফোনও বন্ধ পেয়েছি।
সাজেদা আক্তার সোনিয়া নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, ৭ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলায় ৭৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। ঋণ নিতে এসে দেখি অফিস তালাবদ্ধ। সমিতির পরিচালক মোস্তফার মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। বাড়িতে গিয়েও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রুনা আক্তার নামে আরেকজন জানান, ৫ লাখ টাকা ঋণ দিবে বলে ৫৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে নিয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিসপুর এলাকার মজিবুল হক জানান, ২ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে ২২ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। নির্ধারিত তারিখে ঋণের জন্য গেলে অফিস তালাবদ্ধ পাই। কেউ কেউ বলছে মোস্তফা গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কৃষ্ণরামপুর এলাকার গ্রাহক সাহেদা বেগম জানান, আমার ২ লাখ টাকা ঋণের প্রয়োজন ছিল। মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এরপর ঋণের টাকা নিতে এলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হীরাপুর এলাকার বিবি আয়েশার কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা, আলমপুর এলাকার জেবুন নাহারের ৫ হাজার ৪০০ টাকা, বিবি কুলসুমের ৪ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ভোক্তভোগীদের।।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে দক্ষিণ নেয়াজপুর বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নূরুল মোস্তফা জানান, এ সমিতির কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সমবায় থেকে সমিতি অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সমিতি বিলুপ্ত বা বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।