'চোর শনাক্তে তিন বছরও লাগতে পারে'-সোনাগাজী মডেল থানার সদ্য সাবেক ওসি ওইসময় এমন মন্তব্য করলেও দুর্ধর্ষ চুরির ৭৯ দিন পর পুলিশের হাতে ধরা পড়ল চুরির হোতা মামুনসহ অপর এক সহযোগী। গত ২১ আগস্ট সোনাগাজী থানার ৩০০ গজ এলাকায় আলোচিত ভাই ভাই ইলেকট্রনিক্সে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। গত শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের অভিযানে কুমিল্লা জেলার নিমসার হতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, বগাদানা ইউনিয়নের নদোনা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৮) এবং কুমিল্লা জেলার দেবিদ্দার গোপালপুর গ্রামের মোহন মিয়া ছেলে মোহাম্মদ জয়নাল (৪০)।

এজহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট ভোরে সোনাগাজী বাজারের শেখ আকিলা মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ছয়জনের চোরচক্র দোকান লুট করে ৪০০টির বেশি মোবাইল ফোন, ৫০টি সার্ভিসিংয়ে রাখা মোবাইলফোন, ৫০টি হাতঘড়ি এবং নগদ প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজিবুল ইসলাম পলাশ সোনাগাজী মডেল থানায় ছয়জনসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। চুরির ঘটনার পরে সিসিটিভি ফুটেজে থাকা চোরদের শনাক্ত করা যায়নি। এই বিষয়ে তখনকার ওসি বায়েজীদ হোসেন আকন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, চোর শনাক্ত করতে তিনদিনও লাগতে পারে, তিন বছরও লাগতে পারে। মালামাল লুটের ঘটনায় তৎকালীন ওসির হতাশাজনক মন্তব্যে ভুক্তভোগী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এই ঘটনার ৭৯ দিনের মধ্যেই মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তারে ভুক্তভোগী, ব্যবসায়ী ও নেটিজেনদের মধ্যে এখন স্বস্তি বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজিবুল ইসলাম পলাশ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতচক্রের সঙ্গে যুক্ত এবং আমাদের দোকান লুটের মূল পরিকল্পনাকারী। লুট হওয়ার সময় সে নিজে উপস্থিত ছিল। পুলিশের এই পদক্ষেপে আমাদের মধ্যে আস্থা ফিরেছে। লুট হওয়া ৪০০টির বেশি মোবাইল ফোনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫টি মোবাইলফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা চাই বাকী মালামাল দ্রুত সময়ে উদ্ধার করা হোক।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় ৫টি ওয়ারেন্টসহ দেশের ভিন্ন থানায় মোট ১৯ টি চুরি-চুরি-ডাকাতির মামলা এবং আসামি জয়নালের বিরুদ্ধে ৪টি চুরি, ডাকাতিসহ অস্ত্র মামলা আদালতে বিচারাধীন। এই ঘটনায় ইতোপূর্বে পুলিশ আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। পুলিশ অন্যান্য আসামিসহ বাকি লুটকৃত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।