প্রবাসে ছেলে মীর হোসেন হৃদয়ের প্রতারণার অভিযোগে সোনাগাজীতে গ্রেপ্তার মা শামসুর নাহারকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছে আদালত। গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে সোনাগাজী আমলী আদালতের বিচারক জিয়া উদ্দিন তার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখের মধ্যে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষের সমোঝোতার শর্তে তাকে জামিন প্রদান করেছে আদালত।
বিবাদির আইনজীবী এডভোকেট নান্টু জানান, বিবাদীর দাবি তিনি বাদী সবুজের কাছে টাকা পাবেন। অন্যদিকে সবুজের দাবি, টাকা নিয়ে বিদেশ নিয়ে তাকে কাজ দেওয়া হয় নি। বাদি ও বিবাদী দুইজন একই বাড়ির বাসিন্দা হওয়ায় আদালত মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ ২২ জানুয়ারির মধ্যে সমোঝোতার শর্তে শামসুর নাহারকে জামিন দিয়েছে।
এর আগে গত রোববার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে গ্রপ্তারি পরোয়ানা থাকায় সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়নের নিজ বাড়ী থেকে শামসুর নাহারকে গ্রেপ্তার করে অদালতে পাঠায় পুলিশ।
অভিযোগের বিষয়ে প্রবাসী মীর হোসেন হৃদয় বলেন, সবুজ সম্পর্কে আমার জেঠা হন। উনাকে সাইপ্রাস নিয়ে আসার পর দুইবার মার্কেটে এরপর ফিলিং স্টেশনে চাকুরী দিয়েছিলাম। তিনি কোথাও কাজে বেশিদিন টেকেন না। তার উপর বয়স বেশি হওয়ায় ও ভাষা না জানায় কেউ উনাকে কাজেও রাখতে চান না। সবশেষ আমার গাড়িতে ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ করে রাখতে ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে দিয়েছিল। অন্তত আমার ড্রাইভার পরিচয়ে হলেও যেন তিনি সাইপ্রাস বৈধভাবে থাকতে পারেন।
হৃদয়ের দাবি, সবুজ আমার নাম করে বাংলাদেশ থেকে সাইপ্রাস নিয়ে আসার আশ্বাস দিয়ে ৫ জন থেকে ৩২ লাখ টাকা নিয়েছে। এরমধ্যে ৩১ লাখ টাকা উনার স্ত্রী লিপি আক্তারের ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়। তিনি ওই টাকাগুলো দিয়ে সাইপ্রাসে বসে জুয়া খেলতেন। আমি টাকা নেওয়ার বিষয়গুলো জানতাম না। জানার পর বিএনপির কমিটিতে পদ পাবেন মর্মে তিনি দেশে চলে আসেন। এখন এই বিষয়টি সমাধান না করার জন্য নানা তালবাহানা করে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে।
হৃদয়ের দাবি করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিন সবুজকে বারবার ফোন করে এবং ভয়েস মেসেজ দিয়েও তার বক্তব্য জানা যায় নি।
তবে ইতোপূর্বে দৈনিক ফেনীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মামলার বাদি মাঈন উদ্দিন সবুজ দাবি করেন, হৃদয় ও তার মা মিলে আমাকে সাইপ্রাসে কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নেয়। ওই টাকা আমার ব্যাংক একাউন্ট থেকে শামসুর নাহারের একাউন্টে জমা করা হয়। আমি সাইপ্রাস পৌঁছানোর পর আমাকে কোন কাজ দেয়নি এবং নানাভাবে সময় ক্ষেপণ করে আমাকে অবৈধ অবস্থায় রেখে দেয়। নিজের খরচে থেকে এক বছর পর্যন্ত চেষ্টা করেছি কাজ করার, এরপর দেশে আসতে বাধ্য হই। তাদের প্রতারণার কারণে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এজন্য আমি প্রতিকার চেয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থা ও অভিবাসি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানায়, সবুজ দেশে ফিরে প্রতারণার অভিযোগে বৈদেশিক কর্মসংস্থা ও অভিবাসি আইনে হৃদয়, তার মা শামসুর নাহার ও তার ভাই রৌদ্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। শামসুর নাহারের ব্যাংক হিসেবে ওই টাকা লেনদেন করা হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।