দীর্ঘ ৯ বছরেও গুম হওয়া ফেনীর সোনাগাজীর যুবলীগ নেতা সারোয়ার জাহান বাবুলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সরোয়ারের মা এবং ভাই এক সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার চরচান্দিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
গুম হওয়া যুবলীগ নেতা সারোয়ার জাহান বাবুলের ভাই চরচান্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মানিক অভিযোগ করেন, দলীয় কোন্দলের কারণে পৌর কাউন্সিলর নূরনবী লিটনের দায়ের করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে ২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি ও সারোয়ার জাহান বাবুল ঢাকা যান। রাতে অবস্থানের জন্য রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় হোটেল ‘আসর’ এ রুম ভাড়া নেন তারা। ওইদিন সন্ধ্যায় আবাসিক হোটেল থেকে নেমে নাস্তা করার জন্য রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রধারী ৫-৭ জন দুর্বৃত্ত সাদা মাইক্রোবাসযোগে বাবুলকে তুলে নিয়ে যায়।
২৮ অক্টোবর তিনি বাদি হয়ে পৌর কাউন্সিলর নূরনবী লিটন ও তার ছোট ভাই নাছির উদ্দিন রিপনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা ৫-৭ জনকে আসামি করে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ৯ বছরেও বাবুলের সন্ধান পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা। মামলাও ন্যায় বিচার পাননি তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সরোয়ারের মা বদরুন্নেছা। ছেলের সন্ধানের আশায় কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে গেছে তার। ক্ষণে ক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
মানিক আরো বলেন, তৎকালীণ সময় তার ভাই সারোয়ার জাহান বাবুল সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। দলীয় কোন্দলের জেরে তৎকালীণ সময় পৌর কাউন্সিলর লিটন ও তার ভাই রিপনের সাথে বাবুলের বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জেরেই তাকে অপহরণ করে গুম করা হয়েছে।
বাবুলের মা বদরুন্নেছা বলেন, ৯ বছর অতিবাহিত হলেও ছেলেকে আজও খুঁজে পাইনি। জীবিত হোক মৃত হোক আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। 'বিচারের দায়িত্ব কার? কে করবে খুনীদের বিচার? এই বলেই ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
বাবুল উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরচান্দিয়া গ্রামের ইস্রাফিল মিয়া ও বদরুন্নেছা দম্পতির সন্তান। সরোয়ার জাহান বাবুল ৯ ভাইয়ের মধ্যে ষষ্ঠ সন্তান।