আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের শিকার হওয়া মানুষদের ফিরিয়ে দেবার দাবি জানিয়েছেন তাদের স্বজন ও মানবাধিকার কর্মীরা। আজ শনিবার (২৯ আগস্ট) গুমের শিকার মানুষদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে স্বজন এবং মানবাধিকার কর্মীদের অংশগ্রহণে ফেনীতে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি জানান তারা।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স নেটওয়ার্ক’ এর যৌথ আয়োজনে শহরের শহিদ শহিদুল্লা কায়সার সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ সকল রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন সাংবাদিক নাজমুল হক শামীম। অধিকার ফেনীর ডিফেন্ডার তন্বী সোম’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ফেনী শাখার সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ফেনীর সময় সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ইউথ জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশ (ওয়াইজেএফবি) ফেনী জেলা শাখার সভাপতি ও দৈনিক অজৈয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শাহজালাল ভূইয়া, গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা, ভাই মাহফুজুর রহমান, রিপনের সন্তান নিশাত।
মানবন্ধনে ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসু, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এমডি মোশারফ, সাংস্কৃতিক সংগঠক কাজি ইকবাল আহম্মেদ পরান, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল বুলবুল, অধিকার ফেনীর ডিফেন্ডার সালাম, সুমি, ওয়াসিম, দিদার প্রমুখ।
মানববন্ধনে ভিকটিম পরিবারগুলোর স্বজন ও মানবাধিকার কর্মীরা গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ করছে। এসময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে। একই সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ার’ এর নামে নাগরিকদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা ও হেফাজতে নির্যাতনসহ সকল রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধের দাবিও জানানো হয়।
অধিকার এর সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১ লা জানুয়ারী থেকে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫৭২ জন গুমের শিকার হয়েছেন। অধিকার জানায়, অধিকার তখনই গুমের ঘটনা লিপিবদ্ধ করে, যখন গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা এই বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেন যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ’টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। গুম হওয়া থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন-এমন একটি চুক্তি যা অনুস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাষ্ট্রের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে।