মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছিল পরশুরামের মির্জানগর ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামের সৌরভ আর সালমার। ভবিষ্যত জীবনের সুখ স্বপ্নে বিভোর ছিল দুজন। জীবনটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে নতুন আশা নিয়ে সংসার সাজাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন এখন ফিকে হয়ে গেছে। একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাদের জীবনের সকল আশা-আকাঙ্খার স্বপ্ন আর চেতনাকে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন নববধূ সালমা আর নব বিবাহিত সৌরভ নির্বাক-নিষ্পলক। বেঁচে থাকাটা এখন তাদের কাছে অভিশাপের মত হয়ে গেছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ফুলগাজীর বন্দুয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা আর পিকআপের সংঘর্ষে তারা দুজনেই মারাত্মকভাবে আহত হন। এতে সালমার দু পা ও হাতে এবং সৌরভের দু পায়ে আঘাত লাগে।
আহত সালমার বাবা আবদুর রশিদ জানান, দারিদ্র্যতার সাথে লড়াই করে গত কয়েক মাস আগে চট্টগ্রামের সৌরভের সাথে সালমার বিয়ে দেন। সৌরভ রাজমিস্ত্রি কাজ করে পরশুরাম বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থাকত।
তিনি বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার চট্টগ্রামে অসুস্থ মাকে দেখে বাড়ি আসার পথে ফুলগাজীর বন্দুয়া নামক স্থানে পৌঁছলে তাদের বহনকারী সিএনজিকে একটি দ্রুতগামী পিকআপ ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে সৌরভ ও সালমা মারাত্মক আহত হয়। পরে তাদের ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
আবদুর রশিদ বলেন, আমি একজন দিনমজুর। মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাদের দুজনের চিকিৎসা করার কোন সামর্থ্য আমার নেই। দুর্ঘটনার পর থেকে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় তাদের চিকিৎসা চলছে।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বলছেন আমার মেয়ের ডান পা বাদ দিতে হতে পারে। আর জামাতা এখনও নির্বাক, তার মুখে কোন কথা নেই। তাদের চিকিৎসার জন্য নিজের যা কিছু ছিল, তা ব্যয় করেছি। এখন হৃদয়বানদের সহযোগিতা ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য দুর্ঘটনার পর থেকে অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকালে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াছমিন আক্তারের মাধ্যমে পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল আমার হাতে ৩০ হাজার টাকার অনুদান তুলে দেন। কিন্তু তাদের চিকিৎসার জন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। আগামী শনিবার তার পায়ে অস্ত্রোপাচার করা হবে।
সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন আবদুর রশিদ। তাকে সাহায্য করতে পারেন এই বিকাশ নাম্বারে ০১৮৬৬৬২৪৫০০ (আবদুর রশিদ-সালমার বাবা)। আপানাদের সহযোগিতায় হয়ত হাসি ফুটে উঠতে পারে সালমা-সৌরভ দম্পতির।