লুটের অভিনব কৌশল ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’র শক্তি যেন আরও বেড়েছে। কাগজ অথবা কাপড় শুঁকিয়ে ভুক্তভোগী স্বেচ্ছায় মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুটেরার হাতে তুলে দেওয়ার সত্য গল্প এখন নিত্য ঘটনা। এবার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরও অবিশ্বাস্য! কাগজ শুঁকিয়ে বশে আনার পর ভুক্তভোগী বাড়ি হতে টাকা গহনা এনে তা তুলে দিয়েছে লুটেরার হাতে। সম্প্রতি ফেনীতে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ফেনীতে কাগজ শুঁকিয়ে কথার ফাঁদে ফেলে এক নারীকে বশে এনে গহনা ও টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকচক্র। গত শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী সদরের টেকনিক্যাল এলাকার দারুল আকরাম মাদ্রাসা থেকে সন্তানকে নিয়ে ওই নারী বাড়ি ফেরার পথে ঘটনাটি ঘটে।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগীর স্বামী ফেনীর দাউদপুরের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসান বলেন, ফেনীর কাজীরবাগ ইউনিয়নের দানবক্স ভুঞা বাড়ি হতে তার ছেলে মাহমুদ হাসান ভূঞাকে (৫) নিয়ে ফেনী সদর হাসপাতাল মোড় থেকে ফুলগাজীর উদ্দেশ্যে সিএনজিতে ওঠেন। সিএনজিতে আগে থেকেই দুই ব্যক্তি বসা ছিলেন। ছেলের বিপদের কথা বলে নারীর হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দেন। কাগজটি খোলার পরই ভুক্তভোগী নারী ওই ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যান। প্রতারকরা তাকে বলেন, আপনার ছেলের বিপদ, তাকে রক্ষা করতে হলে কিছু টাকা ও স্বর্ণ দিতে হবে।
প্রতারকদের কথামতো তিনি রাজি হয়ে যান। এরই মধ্যে সিএনজিটি নোয়াকান্দি রাস্তার মাথা পেরিয়ে ফুলগাজী উপজেলার বন্দুয়া দৌলতপুরে প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামের কবরস্থানের পাশের একটি মসজিদের সামনে থামে। সেখান থেকে প্রতারকরা তাকে একই সিএনজি করে বাড়িতে পাঠায়। বাড়িতে পৌঁছে ওই নারী ছেলেকে ঘরে রেখে দ্রুত এক জোড়া কানের দুল ও কিছু টাকা নিয়ে একই সিএনজিতে করে বন্দুয়া মসজিদের সামনে গিয়ে প্রতারকদের হাতে তুলে দেন। এরপর নাম্বারপ্লেটবিহীন সিএনজিটি ফেনী অভিমুখে রওনা হয়ে নোয়াকান্দি রাস্তার মাথায় এসে তাকে নামিয়ে দেয়। নামার সময় প্রতারকরা বলে, পেছনে তাকাবেন না, না হলে বিপদ হবে।
হাসান বলেন, ফেনী শহরে কিছুদিন ধরে এমন প্রতারকচক্র সক্রিয় রয়েছে । একজন মোটা-খাটো ও একজন হালকা গড়নের প্রতারক ‘শয়তানের নিশ্বাসে’ মানুষকে বিভ্রান্ত করে গহনা ও নগদ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। নোয়াকান্দি এলাকায় আমাদের বাড়ির পাশে এরকম ঘটনা সম্প্রতি আরও কয়েকবার ঘটেছে।
তিনি আরও জানান, সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় এবং অভিযোগ দিয়েও ফল হবে না মনে করে থানায় মামলা করেননি।