ফেনীর বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, সাহিত্যিক ও গবেষক কাজী মোজাম্মেল হক আর নেই। আজ মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে আজ দুপুরে মারা গেছেন তিনি। আজ রাত ৯ টায় ফেনী শহরের বনানী পাড়াস্থ মরহুমের বাসভবন ‘হিরামন’ এর সামনে প্রথম জানাযা এবং রাত ১০ টায় ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কাজী বাড়িতে ২য় জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
কাজী মোজাম্মেল হক ১৯৩৯ সালের ২৯ সেটেপম্বর ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের কাজী বাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি বিএ পাশ করে সরকারি চাকরীতে যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ থাকাকালে তার প্রথম গবেষণা গ্রন্থ ‘ইতিহাসের রূপ রেখায় ফেনী’ প্রকাশিত হয়। শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে আসছিলেন। ৯১৮২ সালে প্রকাশিত হয় বৃহত্তর নোয়খালীর ইতিহাস নিয়ে প্রকাশিত হয় তার গবেষণা গ্রন্থ ‘তিন হাজার বছরের নোয়াখালী’।
তার লেখা অন্যান্য বই হচ্ছে “বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের সূচনা ও সম্প্রসারণ”, “তিয়াত্তর ফেরকার বর্ণনা”, “বৃহত্তর নোয়াখালীর পরগণাসমূহের ইতিবৃত্ত”, “পার্বত্য চট্টগ্রাম উপজাতি জনগোষ্ঠীর ইতিহাস”, “শমসের গাজীর জীবনালেখ্য”, “বাইবেল নয়-কুরআনের পথে আসুন” ও “সৈয়দ আমিরউদ্দিন পাগলা মিঞা সাহেবের জীবনালেখ্য এবং ফেনী জেলার ইতিকথা”।
মৃত্যুকালে তিনি ৪ ছেলে, ৩ মেয়ে, নাতি নাতনীসহ আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য শুভাকাংক্ষী রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে কাজী মাযহারুল হক তুরান ও মেজো ছেলে কাজী মইনুল হক সবুজ ব্যবসায়ী। সেজো ছেলে কাজী মোস্তাক গাউছুল হক শরীফও লেখালেখি করেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করছেন। ছোট মেয়ে কাজী দিলরুবা আক্তার লীনাও লেখালেখি করতেন বিভিন্ন দৈনিকে। আরো দুই মেয়ে কাজী হোমায়রা আক্তার, কাজী শিরিনা আক্তার, ছোট ছেলে কাজী তানভীর কিশোর পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন।