দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে নিজের চেনা ঘরের মরচেধরা তালাবদ্ধ দরজা খুলে কালিঝুলি, ধুলো ময়লা সরিয়ে আবার ঝকঝকে গৃহকোণ তৈরি করাটা দারুণ ঝঞ্জাট। এটি কষ্টসাধ্য কিন্তু আনন্দের বিষয়। ‘হৃদয়ের কথা’ তেমনই কষ্টসাধ্য আনন্দের বিষয় জমিয়ে তোলার সাহসিকতা। এটি প্রচলিত অর্থে সাহিত্য নয়; স্মৃতিচারণ। নুরুল আমিন হৃদয় লিখে চলেছেন দুই দশকের বেশি সময় ধরে। পত্রিকার পাঠকের লেখক হয়ে ওঠার দুঃসাহসিক পদক্ষেপ শুরু করেছিলেন সঞ্জীব চৌধুরী। সে পদক্ষেপের ধারাবাহিকতা গিয়াস আহমেদ-আরিফ জেবতিকদের হাত ধরে এগিয়ে গিয়েছিল আরো বেশ কিছুদূর। সে ধারা থেকেই উঠে এসেছিলেন নুরুল আমিন হৃদয়। রম্য লেখক, সংগঠক হিসেবে তিনি পরিচিত এই আঙিনায়। দুই দশকের বেশি সময় ধরে অনেক ভাঙচুরের পর সেই ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম, প্রথম আলো বন্ধুসভাসহ নানান প্লাটফর্মের সেইসব তরুণরা আজ অনেকেই এখন ঠাঁই করে নিয়েছেন অগ্রণী তালিকায়। আবার অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ লেখক হারিয়ে গেছে সময়ের আবর্তে। সে সময়ের আবিষ্কার রম্যলেখক, সংগঠক নুরুল আমিন হৃদয় এখানে স্মৃতিকথার ঝাঁপি খুলে হয়েছেন স্মৃতিকাতর। যে কথাগুলো হৃদয়ের অলিন্দ-নিলয়ে প্রতিনিয়ত ঘুমরে মরছিলো তার কিছুটা আলোর মুখ দেখছে। সেসব কথা বলতে গিয়ে প্রাসঙ্গিক নানান বিষয়, সংশ্লিষ্ট অনেকের কথা ঠাঁই পেয়েছে এখানে।
স্মৃতিকথাও সাহিত্য বিবেচিত হয় কালোত্তীর্ণ লেখকের কলমে। সময় বিবেচনায় সাড়া জাগানো ঘটনা বা বিষয় নিয়ে স্মতিকথাও হয়ে ওঠে সাহিত্য। সময়ের পর্দায় জমে থাকা ধুলো ঝেড়ে আলোর মুখ দেখতে যাওয়া ‘হৃদয়ের কথা’ সে বিবেচনায় কতো দূর যাবে তার হিসেব সময়ের কাছেই জমা থাকলো। আর এই প্রকাশনাকে আলোর মুখ দেখাতে যে শ্রম আর উদ্যম বিনোয়োগ হয়েছে তার জন্য সাধুবাদ পেতে পারেন হৃদয়ের কথা’র লেখক নুরুল আমিন হৃদয় এবং ভাটিয়াল প্রকাশন।
২০২০ একুশে বইমেলায় বইটি প্রকাশ হয়েছে ‘ভাটিয়াল প্রকাশন’ থেকে। প্রচ্ছদ করেছেন চিত্রশিল্পী আবু হাসান। দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। বইটি একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লিটলম্যাগ চত্বরের ভাটিয়াল স্টল নাম্বার ২৭, এবং চট্টগ্রাম একুশে বইমেলা’সহ ফেনী একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে।