পরশুরামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আইডি নম্বর না থাকায় গত এক দশকে বি রহমান সড়কে সংস্কার হয়নি। প্রায় ৭০ বছরের পুরনো এ সড়কে এখন যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাত গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের খন্ডল হাই-জমিয়ার গাঁও পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বি রহমান সড়ক দিয়ে উত্তর গুথুমা, দক্ষিণ গুথুমা, পূর্ব বাঘমারা, পশ্চিম বাঘমারা, উত্তর টেটেশ্বর ও চারিগ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ চলাচল করতেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার না করায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও উঠে গেছে পিচ ও মাটি। বর্ষাকালে এসব গর্ত ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় পথচারীরা চলাচল করতে পারেন না। সড়কের দুই পাশের গাছপালা, লতা-গুল্ম ও আগাছা বেড়ে সড়কটি আচ্ছাদিত হয়ে পড়েছে। বন বিভাগের উদাসীনতায় সড়কের দুই পাশে জন্ম নেওয়া গাছ ও ঝোপঝাড় পুরো রাস্তাটি দখল করে ফেলায় মানুষের চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ষাটের দশকে বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান জমিয়ার গাঁওয়ের বাসিন্দা বজলুর রহমান (দারোগা) মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে নিজস্ব অর্থায়নে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কটি নির্মাণ করেন।
পশ্চিম বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কাদের দুলাল জানান, এ সড়কটি সাত গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ ছিল। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাছপালা, ঝোপঝাড় ও আগাছা সড়কে বিস্তার লাভ করে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
জমিয়ার গাঁওয়ের আবুল খায়ের জানান, বি রহমান সড়কটি পুনরায় এলজিইডির আওতায় এনে সংস্কার করে চলাচলের সুবিধা করে দিলে মানুষ উপকৃত হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সড়কের পাশে কাপ্তান বাজারে ইটভাটার ইট ও মাটি পরিবহনের ফলে সড়কটির মধ্যবর্তী স্থানের বাগমারা অংশে ভেঙে গেছে। দেখলে মনে হয়, কেউ পরিকল্পিতভাবে কেটে দিয়েছে।
এদিকে সড়কটির বিষয়ে এলজিইডি উপজেলা দপ্তরে কোন তথ্য নেই। এলজিইডি’র নথিভুক্ত না থাকায় সড়কটির কোন আইডি নম্বর নেই। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এটির সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। কিভাবে সড়কটি পাকা করা হয়েছে এ বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারেননি এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তারা।
মরহুম বজলুর রহমানের নাতি শাখাওয়াতুল ইসলাম মিজান জানান, সড়কটি এলজিইডি’র নথিভুক্তির মাধ্যমে সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করতে ইউএনও বরাবরের লিখিত আবেদন করেছি। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে দখল করে সড়কটি সংকুচিত করে রেখেছে।
এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী এসএম শাহ আলম ভূঁইয়া সড়কটির আইডি নম্বর না থাকার কথা স্বীকার করে জানান, কোন কারণে সড়কটির আইডি নম্বর হয়নি। সড়কটিকে শীঘ্রই আইডিভুক্ত করে সংস্কার করা হবে।