চলতি বোরো মৌসুমে পরশুরামে আবাদি জমিগুলোতে উচ্চ ফলন হলেও ধানের বাজার দাম কম হওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় কৃষক। অন্যদিকে শ্রমিক সংকট এবং মজুরি বেশি হওয়ায় ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। কৃষকদের দেয়া তথ্যমতে, বর্তমানে বাজারে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকা থেকে সাড়ে ৮শ টাকা পর্যন্ত। এদিকে ১ জন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি গুণতে হচ্ছে সাড়ে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত।
উপজেলার বীরচন্দ্র নগর এলাকার কৃষক আব্দুস সাত্তার দৈনিক ফেনীকে জানান, এবারের বোরো মৌসুমে ১ বিঘা জমি আবাদ করে সব হিসাব করে সাড়ে ৪ হাজার টাকার বেশি লোকসান গুণতে হয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে হলে আগামীতে মানুষ জমিতে আবাদ করতে চাইবে না।
কৃষক মনছুর আলম বলেন, নিজের মালিকানাধীন জমি বিধায় অনাবাদী রাখতে পারিনি। তবে এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু এখন এতো কম দাম হওয়ায় চাষ করেও বিপাকে আছি।
এমাম হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, শ্রমিকের টাকা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জামাল উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ধান ব্যবসায়ী বলেন, অতিরিক্ত যোগানের ফলে মিলাররা দাম কমিয়ে দিয়েছে। মৌসুমের শেষেরদিকে ধানের দাম বাড়তে পারে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৩ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ২ শত ৪০ হেক্টর জমিতে। তম্মধ্যে বোরো উফশী ও বোরো হাইব্রিড চাষ হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সামছুল হুদা বলেন, কৃষকের খরচের তুলনায় ধানের বাজারদর অনেকটা কম। তবে কৃষকদের সহায়তায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ কিছুটা হলেও স্বস্তি দিবে। তিনি বলেন, মির্জানগরে ৬৮ জন কৃষক প্রতিজন ১ টন করে সরকারিভাবে ধান বিক্রয়ের সুযোগ পাবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান দৈনিক ফেনীকে বলেন, বাজারদর কম হলেও সরকারিভাবে উপজেলার ২৭৮ জন কৃষকের ধান কেনার প্রক্রিয়া চলছে। যেখানে কৃষক প্রতিমণ ধান বিক্রি করে ১ হাজার ৮০ টাকা পাবে। তিনি আরও বলেন, ধানের ফলন যাতে ভালো হয় সেজন্য আমরা কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন কাজ করেছি। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কাজ করেছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশার মধ্যে আছেন।
উপজেলায় বর্তমানে ৬ হাজার হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে বলে জানান এ কৃষিবিদ।