১৮ জানুয়ারি ২০২০ ।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
শেখ রাসেল জাতীয় স্কুল ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে (অনুর্ধ্ব-১৪) চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দে ভাসছে ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা। জাতীয় পর্যায়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের এ সাফল্যে উৎফুল্ল সকলে।
আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে বালক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন স্কুলের শিক্ষার্থী আরিয়ান ও আরমান এবং বালিকা পর্যায়ে রানার্স আপ মাহি ও ঈশিতাকে সংবর্ধনা দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য ঈশিতা বালিকা এককে রানার আপ হয়েছে।
ফেনীর স্কুল শিক্ষার্থীদের সাফল্যের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার বলেন, বিগত এক বছর ধরে আমরা স্কুল ব্যাডমিন্টনের জন্য ইনডোর গেম সুবিধাদি উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এ এক বছরের ফলাফল হচ্ছে আজকের এ অর্জন। শেখ রাসেল জাতীয় স্কুল ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার ৪টি ইভেন্টের মধ্যে ৩টি ইভেন্টেই আমাদের ছেলেমেয়েরা সাফল্য পেয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিশাল অর্জন।
তাদের এ প্রাপ্তিতে ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের সভাপতি ও সাপ্তাহিক হকার্স সম্পাদক নুরুল করিম মজুমদার বলেন, ব্যাডমিন্টনে জাতীয় পর্যায়ের এ অর্জন শুধু ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের নয়, এ গৌরব পুরো ফেনীর। উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায় পার করে জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্ব অর্জন করেছে স্কুলের ছেলে-মেয়েরা। তিনি বলেন, যদিও আমাদের মাঠের জায়গা কম, তবুও আমরা ছেলেমেয়েদের ইনডোর খেলাধুলার প্রতি যথেষ্ট উৎসাহ দিচ্ছি। আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়েরা যদি জাতীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে চায়, আমরা তাদের সব রকমের সাহায্য সহযোগিতা করব।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়া উপজেলা পর্যায় থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলতে যায়। তাদের এ অর্জন আমাদের স্কুলের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করেছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য তসলিম হাজারীর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও তত্ত্ববধানে ছেলেমেয়েরা এ গৌরব অর্জন করেছে। আমি আশা করি ভবিষ্যতে তারা আরও এগিয়ে যাবে। ব্যাডমিন্টনে নিয়মিত সাফল্য অর্জনে আমাদের সামর্থ্যরে সবটুকু আমরা সবসময় করে যাব।
ফেনী ব্যাডমিন্টন একাডেমীর প্রশিক্ষক ও পরিচালক তসলিম হাজারী বলেন, পরিশ্রম করলেই সফলতা আসবে। ছেলেমেয়েরা নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে খেলে প্রশিক্ষণের দেড় বছরের মাথায় জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তিনি বলেন, ফেনীর ক্রীড়ামোদিসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার আরও বেশি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিয়মিত ভালো ফলাফল সম্ভব।
জয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আরিয়ান ও আরমান জানায়, ফেনী হতে জাতীয় পর্যায়ে গিয়ে শিরোপা জয় করে আমরা বেশ খুশি। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় হয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে নিজেদের প্রচেষ্টা বজায় রাখবে বলে জানায় দুজনেই।
বালিকা পর্যায়ে রানার্স আপ ঈশিতা ও মাহি জানায়, আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য। অল্প কয়েক পয়েন্টের জন্য হেরে গেছি। আগামীতে জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে ভালো খেলা উপহার দিয়ে ফেনীর জন্য আরও সুনাম কুড়িয়ে আনতে চেষ্টা করে যাব।
ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের ১৯৮৬ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, এককালে ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুল ফুটবলে ছিল অপ্রতিরোধ্য। একসময় স্কুলের ফুটবল খেলা দেখতে অপেক্ষা করত ফেনীবাসী। আজ সময়ের পরিবর্তনে অন্যান্য খেলায়ও ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলে এগিয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা যারা জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেল তাদেরকে আমার অভিনন্দন।
একই স্কুলের ২০০১ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী চৌধুরী মহিব উল হাসান মিশু স্কুলের শিক্ষার্থীদের এ অনন্য অর্জনে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, নিজের শৈশব কৈশোরের দশটি বছর কাটানো প্রাঙ্গণ থেকে উঠে গিয়ে নিজের প্রাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোট ভাইবোনেরা যখন তুমল প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায় থেকে ফেনীর জন্য গৌরব বয়ে আনে তখন অন্যরকম আবেগে আপ্লুত হয় মন। স্বপ্ন দেখার ব্যাপ্তি বেড়ে যায় অনেকগুণ।