মাহবুব উল হক পেয়ারা স্মৃতি একাডেমী কাপের দ্বিতীয় আসরের শিরোপা জিতল ফেনী জুনিয়র ক্রিকেট একাডেমী। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে রৌশনাবাদ ক্রিকেট একাডেমীকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবাবেরর মত একাডেমী কাপের শিরোপা ঘরে তুলে নিল দলটি।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে রৌশানাবাদ ক্রিকেট একাডেমী। দলের পক্ষে ব্যাটসম্যান ইয়াজ উদ্দিন ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৫৩ রান ও সায়েম ৩৫ বলে ৩৭ রান করে। ফেনী জুনিয়র ক্রিকেট একাডেমীর বোলার ইউসুফ ৪ উইকেট লাভ করে।
জয়ের জন্য ১৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তেমন বেগ পেতে হয়নি জুনিয়র ক্রিকেট একাডেমীর ব্যাটসম্যানদের। ১৪.২ ওভার বল খেলে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান করে জয় নিশ্চিত করে তারা। দলের পক্ষে শান্ত ২৯ বলে সর্বোচ্চ ৫৯ রান ও সিফাত ১৬ বলে ৩০ রান সংগ্রহ করে। ফাইনালে অনবদ্য বোলিংয়ের জন্য ফেনী জুনিয়র ক্রিকেট একাডেমীর বোলার ইউসুফ ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল নির্বাচিত হয়। ম্যাচ পরিচালনা করেন আম্পায়ার বিধান সেন ও মোশারফ হোসেন সুমন।
ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী।
পুরস্কার প্রদানকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ক্রিকেট বাংলাদেশকে বিশ্বে মাথা উঁচু করার পথ দেখিয়েছে। ফেনীর ক্রীড়াঙ্গনে মাহবুল উল হক পেয়ারার অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলার খেলাধুলার উন্নয়ন ও বিকাশে মাহবুল উল হক পেয়ারা অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর গেম ডেভলাপমেন্ট ম্যানেজার ও বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দলের ম্যানেজার আবু ইমাম মোহাম্মদ কাউছার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রেখেছে তৃণমূলের খেলোয়াড়রা। কাউছার বলেন, বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার পিছনে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের ক্রিকেটের অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, বয়স ভিত্তিক দল শক্তিশালী হলে জাতীয় দল শক্তিশালী হবে এবং জাতীয় দল বিশ্বকাপ জিতবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেনীতে একটি পুর্নাঙ্গ ক্রিকেট স্টেডিয়াম খুবই জরুরী। এখানে অনেকগুলো ক্রিকেট একাডেমী আছে, কিন্তু সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন মাঠ নেই। এসময় তিনি ফেনীর প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্রীড়া সংগঠকদের এ বিষয়ে জোরালো চেষ্টা করার আহ্বান জানান। বিসিবির নীতি নির্ধারকদের কাছে ফেনীর ক্রিকেট উন্নয়নের জন্য মাঠের দাবী তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সদরের কাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদ সোহাগ, ফেনী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, ক্যাফ’র সহ-সভাপতি মোস্তফা জামাল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য তোহিদুল ইসলাম তুহিন, ফেনী জেলা ক্রিকেট এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন, ফেনী গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের ডিএমডি মুশফিকুল হক মাসুম প্রমুখ।
ফেনী জেলা ক্রিকেট এসোসিয়েশন (ক্যাফ) এর আয়োজনে ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ১৮ ফেব্রুয়ারি টি-টুয়েন্টি পদ্ধতিতে টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়ায়। এতে ফেনীর ৮টি ক্রিকেট ক্লাব অংশ নেয়।
ক্যাফ সভাপতি ইমন উল হক বলেন, আমরা প্রতিবছর এ আয়োজন ধরে রাখতে চাই। যার জন্য আমাদের প্রয়োজন মাঠ। মাঠের ব্যবস্থা থাকলে আমরা এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে ভালো ক্রিকেটার খুঁজে বের করবো।
টুর্নামেন্টে ৯ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার নির্বাচিত হয় রৌশানাবাদ ক্রিকেট একাডেমীর বোলার নুরুল আবছার পরশ। একই দলের সাইমুন মুনতাসির ২০৬ রান নিয়ে সেরা ব্যাটসম্যান নির্বাচিত হয়। ফেনী জুনিয়র ক্রিকেট একাডেমীর ব্যাটসম্যান রাকিবুল ইসলাম শান্ত টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়। ফেয়ার প্লে এ্যাওয়ার্ড জয়ী হয় গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফেনী ক্রিকেট একাডেমী।