স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা ও দুই ছেলে এবং দুই মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে প্রবাসে ২০০৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর গ্রামের হারিছ আহাম্মদ মিয়াজী। পরে তার লাশ দেশে এনে গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিলো। সেই হারিছ আহাম্মদের কবরের পাশে জোড়া কবরে গতকাল সোমবার (৩০ জুন) তার স্ত্রী ও বড় ছেলে হাফিজুল ইসলাম মিয়াজীকে কবরস্থ করেছে স্বজনরা। শনিবার সন্ধায় ফেনী গোডাউন কোয়ার্টার রেলক্রসিং এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রথমে ছেলে হাফিজুল ইসলাম মিয়াজী নিহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা ফাতেমাতুজ জোহরাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার রাতে মা ও ছেলের মৃত্যুর ৪৬ ঘন্টা পর তাদের লাশ দাফন করা হয়। লন্ডনপ্রবাসী ছোট মেয়ে ফারহানা আক্তার স্মৃতি দেশে ফেরার পর গতকাল স্থানীয় কাবিল ভূঁইয়া জামে মসজিদে নিহতদের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থান দাফন সম্পন্ন করা হয়।

নিহত ফাতেমাতুজ জোহরার ছোট ছেলে রিয়াজুল ইসলাম মিয়াজী জানান, ২০২১ সাল থেকে আমার মা লন্ডনপ্রবাসী ছোট বোন ফারহানা আক্তার স্মৃতির নিকট বসবাস করে আসছিলেন। গেলো কোরবানির ঈদ উদযাপন করতে তিনি দেশে এসেছিলেন। আগামী ২৭ জুলাই তিনি পুনরায় মেয়ে ফারহানার কাছে লন্ডনে ফেরার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যে শনিবার আমার বড় ভাই হাফেজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে করোনা পরীক্ষা করতে নোয়াখালী গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ফেনী মহিপাল থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা যোগে গোডাউন কোয়ার্টার রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় সিএনজি অটোরিকশাটি যানজটের কবলে পড়ে। এসময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রেলক্রসিং অতিক্রমকালে সিএনজি অটোরিকশাটি ট্রেনের চাপা পড়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে মা ও ছেলে দুজনই মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারায়।

অন্যদিকে, মা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর শুনতে পেয়ে দাফন পুর্ব সময়ে তাদের শেষ বিদায় জানাতে আত্মীয়স্বজনসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারো মানুষ উপস্থিত হন।

মৃত্যুকালে ফাতেমাতুজ জোহরা এক ছেলে ও দুই মেয়ে এবং হাফিজুল ইসলাম মিয়াজী স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে যান। নিহতদের নামাজে জানাজা পড়ান ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মাওঃ ফারুক আহমাদ।