আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ জুন) বিকালে দাফন করা হবে ‘গেদু চাচা’ খ্যাত প্রখ্যাত সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার মোজাম্মেল হককে। তার পরিবারের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মোজাম্মেলক হকের ফুফাত ভাই সৈয়দ আশরাফুল হক আরমান।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে তার মরদেহ ঢাকার সেগুনবাগিচায় নিজ বাসভবনে নেয়া হবে। সেখানে প্রথম জানাযা শেষে তার মরদেহ ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের গতিয়া সোনাপুর খোন্দকার বাড়ীতে আনা হবে। বিকালে ২য় দফা জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।
এরশাদের শাসনামলে ‘গেদু চাচার খোলা চিঠি’ কলাম লিখে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সাংবাদিক খোন্দকার মোজাম্মেল হক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও নাতী নাতনীসহ আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর খবর শুনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও সমবেদনা জানান।
ফেনী সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকা'র উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি প্রখ্যাত সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার মোজাম্মেল হক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফেনী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তানভীর আলাদিন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ ভুঁইয়া। এক শোকবার্তায় তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খোন্দকার মোজাম্মেল হক রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকাল ৪টার দিকে মারা যান।
গত শতকের ৮০ এর দশকে সুগন্ধা নামে একটি সাপ্তহিক প্রকাশিত হত খন্দকার মোজাম্মেলের সম্পাদনায়। সেখানে ‘গেদু চাচার খোলা চিঠি’ নামে একটি কলাম লিখতেন তিনি, যাতে সরস কথায় সামরিক শাসনের সমালোচনা করা হত। ওই সময় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল গেদু চাচার খোলা চিঠি।
ফেনী থেকে উঠে আসা খন্দকার মোজাম্মেল হক পরে সূর্যোদয় নামে আরেকটি সাপ্তাহিকও প্রকাশ করেন। এরপর আজকের সূর্যোদয়ও বের হয় তার সম্পাদনায়। তিনি ছিলেন এর প্রধান সম্পাদক।
১৯৫০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর ইউনিয়নের গতিয়া সোনাপুর খোন্দকার বাড়ীতে খোন্দকার মোজাম্মেল হক জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন রাজনীতিতে। ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অগ্রভাগে। অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে।
এর আগে শনিবার (২৭ জুন) রাতে মোজাম্মেল হক বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে নমুনা পরীক্ষা তার শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়।
খোন্দকার মোজাম্মেল হক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য।
এছাড়া ওয়ার্ল্ড ওয়াইড অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিইও, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।