করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিকল্প পদ্ধতি টেলিভিশনের মাধ্যমে লেখাপড়া চালানোর কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামীকাল রবিবার (২৯ মার্চ) থেকে। বিষয়ভিত্তিক লেকচারগুলো বাছাই করে নির্বাচিত শিক্ষকদের দিয়ে রেকর্ডিং ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। দুই দিন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে সংসদ টেলিভিশন ও বিটিভির মাধ্যমে তা প্রচার শুরু হচ্ছে। সপ্তাহে ৭টি এবং মাসে ২৫টি ক্লাস প্রচার হবে। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিটি বিষয়ে ক্লাস সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সম্প্রচার হবে। পরবর্তী সময়ে এগুলো মাউশি ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউবে সংরক্ষণ করা হবে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা পরে পড়তে পারবে। সরকার এ পদ্ধতির নাম দিয়েছে 'আমার ঘরে, আমার ক্লাস'।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তারা জানান, ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রতিটি বিষয়কে টাচ করা হয়েছে। তবে ইংরেজি, গণিত, বাংলা এবং বিজ্ঞানের বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়গুলোর ক্লাস বেশি থাকবে। রোববার থেকে বুধবার ৭টি এবং বৃহস্পতিবার হাফ অর্থাৎ অর্ধেক ক্লাস প্রচার হবে। প্রত্যেকটি ক্লাস ইউটিউব এবং www.connect.gov.bd এখানে সংরক্ষণ থাকবে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা যখন পুরো বিশ্বটাকে তছনছ করে দিয়েছে তখন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মধ্যে রাখতে এ টেলিভিশনে ক্লাস প্রচার করার উদ্যোগ নিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ তিনি বলেন, এ মুহূর্তে তোমাদের জন্য দুটি সুযোগ আছে। খুব ভাল করে পরিষ্কার থাকার পাশাপাশি ভাল করে পড়ালেখা করার সুযোগ। যদিও বাইরে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, তবে আমাদের ঘরের স্কুলগুলো কিন্তু বন্ধ হয়নি। সরকার তোমার ঘরের স্কুলে লেখাপড়ার দ্বার খুলে দিয়েছে। স্কুলটির নাম হচ্ছে আমার ঘরে আমার স্কুল।
কর্মকর্তা বলছেন, টেলিভিশনের প্রচার হওয়া ক্লাসগুলো হবে অনেকটা স্কুলের ক্লাসগুলোর মতো। প্রত্যেকটি ক্লাস শেষে বাড়ির একটা কাজ দেবেন শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিষয়ের জন্য একেকটা খাতা সংরক্ষণ করবে। সেই খাতায় মধ্যে রেকডিং করা ক্লাসগুলোর বিষয় এবং হোমওয়ার্কগুলো লিখে রাখতে হবে। স্কুল যখন খুলবে তখন ওই খাতা শিক্ষকদের দেখাবে। শিক্ষক সেই খাতা মূল্যায়ন করে নম্বর দেবেন যেটি বার্ষিক পরীক্ষার মূল নম্বরের সঙ্গে যোগ হবে।
মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, গত শুক্রবার থেকে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে শ্রেণিপাঠের ক্লাস রেকর্ডিং করা শুরু হয়। এর মধ্যে একটি স্টুডিও সরকারের শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর। এ ছাড়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং মোবাইলফোন অপারেটর রবির স্টুডিওতে এসব ক্লাস রেকর্ডিং করা হয়েছে।
এদিকে প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনার পর সব বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মধ্যে রাখতে ১ কোটি চলিস্নশ লাখ মায়ের মোবাইলে এসএমএসে দেওয়া হচ্ছে। এসএমএসে বলা হচ্ছে 'এখন স্কুল বন্ধ থাকলেও রুটিন করে পড়ালেখা করতে হবে। বাইরে বের হওয়া যাবে না। আর মা-বাবাদের শিশু ও শিক্ষার্থীদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।'