ফেনীতে আজ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোভিড শনাক্তের সংখ্যা ৮৯জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৩ জন। ফেনী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন অফিশিয়াল ফেইসবুক আইডিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে ফেনীতে কোভিড-১৯ শনাক্তের তুলনায় সুস্থতার হার প্রায় ৬০ ভাগ। সুস্থতার হারে ফেনী অনেকখানি এগিয়ে আছে দেশের প্রধান জেলাগুলোর তুলনায়।
আইইডিসিআর এর তথ্যমতে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৩২১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৪২৫জন, সুস্থতার হার প্রায় ২০ শতাংশ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এই রোগে ৫৫৯ জন মারা গেছেন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজ তথ্যমতে চট্টগ্রাম জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৬৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯৭ জন। সুস্থতার হার প্রায় ১১ শতাংশ।
দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় ফেনীতে অধিক হারে সুস্থতা প্রসঙ্গে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত আর নমুনা পরীক্ষার যথার্থতা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।
সিভিল সার্জন অফিসে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করছে করোনাভাইরাস। তবে ফেনীতে সুস্থতার উচ্চহারের সুস্পষ্ট কারন এখন বলা সম্ভব নয়, এটি গবেষণার বিষয়।
ফেনীতে সুস্থতার হার বেশী প্রসঙ্গে বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ সাহেদুল ইসলাম কাওসার বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ব্যাখ্যা করার সময় এখনো হয়নি। করোনা শনাক্ত ব্যক্তির পুণঃ নমুনা পরীক্ষার ফল দ্রুত নেগেটিভ প্রাপ্তি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপা।
নমুনা সংগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপসর্গ ব্যতীত নমুনা সংগ্রহ না করা উত্তম।
ফেনীতে এ পর্যন্ত একাধিক কোভিড শনাক্তকৃত রোগী নিজের মধ্যে করোনা উপসর্গ নেই দাবী করেছেন। বুধবার করোনা শনাক্ত দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন জানান, তিনি কোনোরকম শারীরিক অসুবিধা বোধ করছেন না। একইভাবে উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা সিদ্দিকী, ছাগলনাইয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এনাম মজুমদার করোনা পজিটিভ হলেও অসুস্থ ছিলেন না। পরবর্তীতে পরপর দুই নমুনা পরীক্ষায় শেষ দুজনকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়।
কোভিড শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা যায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের। ১০ মে ফেনীতে ৮ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে এমন চিত্র সামনে আসে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র সেসময় জানিয়েছিল, সিভাসুতে ২৬ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এলে তা তাৎক্ষণিক বিআইটিআইডিতে পুণঃ পরীক্ষার পর ৮জনের পজিটিভ ঘোষণা করা হয়।
একটি প্রতিবেদনের জন্য তথ্য প্রদানকালে ১০ মে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ হাসান শাহরিয়ার ফলাফলে সন্দেহ প্রকাশ করে পুণরায় পরীক্ষার কথা জানান। এ ফলাফলে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদ রানাসহ ৭জনের নমুনা পজিটিভ আসে। জানা যায়, এদের কারোরই উল্লেখযোগ্য কোনো উপসর্গ ছিল না। ডাঃ মাসুদ রানা ও আরও ৩জন স্বাস্থ্যকর্মী বৃহস্পতিবার কাজে যোগদান করেছেন।
দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুবাইয়েত বিন করিম জানান, বৃহস্পতিবার দাগনভূঞা আক্রান্ত ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৪জনকে সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
১৬ মে ফেনী জেলায় সর্বোচ্চ ৩১জনের করোনা পজিটিভ ঘোষণা করে সিভাসু। তখনো ডাক্তারদের মধ্যে সন্দেহের দানা বাঁধে ফলাফলের যথার্থতা নিয়ে। মঙ্গলবার ডাঃ শরফুদ্দিন মাহমুদ জানান, এদের মধ্যে ১৪জনের পরবর্তী নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে।