শেষ পর্যন্ত রেহাই পেলেন না করোনা যুদ্ধে চট্টগ্রামের সেক্টর কমান্ডার খ্যাত চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরও। তিনি ধরাশায়ী হয়েছেন করোনা’র কবলে।
একইসাথে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন স্বাস্থ্য পরিচালকের মা রাজিয়া কবীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছে একুশে পত্রিকা।
এর আগে জ্বর, সর্দি, গলাব্যথার মতো করোনা-উপসর্গ দেখা দেওয়ায় নমুনা পরীক্ষায় পাঠিয়ে গত রোববার (২৪ মে) থেকে হোম আইসোলেশনে চলে যান চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।
ওইদিনই এক অফিস আদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোস্তফা খালেদ আহমদকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দায়িত্ব দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আগের দিন নিজের স্বাস্থ্য-অবস্থা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলেন ডা. শাহরিয়ার।
এরপর হোম আইসোলেশন থেকেই চট্টগ্রাম বিভাগে করোনা-প্রাদুর্ভাব রোধে সমন্বয় ও তদারকি করে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের শীর্ষ এই করোনাযোদ্ধা। এরমধ্যেই জানা গেলো, তিনি এবং তাঁর ৭৩ বছর বয়সী মা রাজিয়া কবীরের করোনা-পজিটিভ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হোম আইসোলেশনে থাকা ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, তার মায়ের করোনা-পজিটিভ রিপোর্ট হাতে পেলেও এখনো নিজেরটি পাননি। তবে তিনি শুনেছেন তারও করোনা-পজিটিভ।
ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, করোনা-প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই আমি পুরো চট্টগ্রাম বিভাগ চষে বেড়িয়েছি। এই অঞ্চলের মানুষকে কীভাবে করোনামুক্ত করা যায়, কীভাবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সেবা দেয়া যায় তা নিয়ে দিনরাত কাজ করেছি। সম্মুখসমরে যেহেতু আছি, সেহেতু করোনা-পজিটিভ কিংবা যুদ্ধে আহত হতেই পারি। তা নিয়ে আমার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে করতে জীবনটা যদি চলেও যায়, তাতে আমার কোনো আক্ষেপ থাকবে না।
আমার কষ্ট বা দুশ্চিন্তা কেবল আমার মাকে নিয়ে। মা একেতো বয়স্ক, দ্বিতীয়ত কিডনি ডায়ালাসিসের রোগী। এ অবস্থাতেই তার করোনা-পজিটিভ ধরা পড়লো। এই সঙ্কটে একজন করোনা রোগীর ডায়ালাসিস কোথায়, কীভাবে হবে সেটাই এখন বড় টেনশন। কারণ আমি মায়ের একমাত্র সন্তান। যোগ করেন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর।
হাসান শাহরিয়ার কবীর ফেনীর সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সূত্রঃ একুশে পত্রিকা