ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে কর্তব্য পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন মোঃ সাজ্জাদ হোসেন।


হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজির সভাপতিত্বে, আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঞার পরিচালনায় ২৭ জন নির্বাচিত নার্স, আয়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ড্রাইভারকে প্রশিক্ষণ দেন রিসোর্স পার্সন ডাঃ জি এস শামীম ও ডাঃ ইসতাব রাকিন।


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় তিন স্তরে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নার্স, এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারদের করোনা সংক্রমিত রোগীর ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা প্রদানে মেডিকেল অফিসার ও কনসালটেন্টদের প্রশিক্ষণ। আজ প্রথম পর্বের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।


প্রশিক্ষণ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন জানান, কেউ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হলে তার পরিচর্যা বিষয়ে সেবিকা ও অন্যান্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তার ও নার্সরা করোনা আাক্রান্তদের চিকিৎসা করবে।


সিভিল সার্জন জানান, একজন নার্স একদিন ডিউটি করে কোয়ারেন্টিনে চলে যাবে। কোয়ারেন্টিন থাকাকালীন তার সব ধরণের দায়িত্ব স্বাস্থ্য বিভাগ বহন করবে। তিনি জানান, এ প্রশিক্ষণ প্রয়োজনে একাধিকবার হবে।


ফেনীতে করোনা আক্রান্ত রোগী প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন বলেন, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে এমন কেউ শনাক্ত হননি। একজন সন্দেহযুক্ত ছিলেন যা পরীক্ষায় করোনামুক্ত চিহ্নিত হয়েছেন।


হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজি জানান, যারা আইসোলেশন ওয়ার্ডে কাজ করবে তাদের আলাদা প্রশিক্ষণ জরুরী। কারন করনো ইস্যু অন্য অসুখের চেয়ে একদম ভিন্ন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী কিভাবে কাজ করবে, নার্স কিভাবে নিজের নিরাপত্তা নেবে এবং কিভাবে রোগীর সেবা করবে তা শেখানো হয়েছে।


তিনি বলেন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে দায়িত্বের জন্য নির্বাচিত নার্স ও অন্যান্যদের প্রয়োজনীয় পিপিই, গ্লাভসসহ সবকিছু দেয়া হয়েছে। ডাক্তারদের জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে। ডাক্তাদের প্রশিক্ষকালে এসব ব্যবহার প্রণালী তাদের দেখিয়ে দেয়া হবে।


হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, আজকের প্রশিক্ষণে ১২ জন নার্স, ৩ জন আয়া, ৩ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ৩ জন নিরাপত্তারক্ষী ও ৩জন এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও ১০ জন মেডিকেল অফিসার ও ৯ জন কনসালটেন্ট করোনাভাইরাস আক্রান্তের চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করবেন।


তিনি বলেন, নার্সরা কি করে রোগীর সেবা দিবেন, কিভাবে বর্জ্য পরিস্কার করতে হবে এবং এ্যাম্বুলেন্স করে কিভাবে রোগী বহন করতে হবে তা ড্রাইভারদের শেখানো হয়েছে। তিনি জানান, হাসপাতালে দুজন রিসোর্স পার্সন রয়েছেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে দুজন ডাক্তার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।


প্রশিক্ষকদের একজন ডাঃ জি এস শামীম বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের কিভাবে চিকিৎসা ও সেবা দিতে হবে তা আজকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শেখানো হয়েছে।


তিনি জানান, তাদের বলা হয়েছে দেশের এ দুর্যোগ মুহূর্তে আমরাই সৈনিক। করোনার বিরুদ্ধে দেশ রক্ষায় আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। দেশের মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, আমাদের পিছু হটার সুযোগ নেই।


প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সদের একজন মোছাম্মৎ মোমেনা বেগম। প্রশিক্ষণ সম্বন্ধে তিনি বলেন, আমরা ছয় স্তরে হাত ধুবো, কিভাবে পিপিই পরতে হবে কিভাবে খুলতে হবে, রোগীর কি লক্ষণ দেখলে আমরা বুঝবো তিনি করোনা আক্রান্ত, রোগীকে কিভাবে খাওয়াতে হবে, কিভাবে গ্লাভস পরবো এবং কিভাবে ডিসপোজ করতে হবে তা শেখানো হয়েছে।