ফেনী শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাজার এলাকায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য হকার ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের ট্রাংক রোড, শহীদ মিনার চত্বর, কলেজ রোড, মিজান রোডসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ফুটপাত দখলের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ফুটপাত দখল হওয়ায় একদিকে বাড়ছে যানজটের তীব্রতা ও অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন পথচারীরা। জনজীবনের এই দুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ফুটপাতে এসব দোকানের কারণে চলাচল করা সম্ভব হয় না। দোকানের ক্রেতা ও বিক্রেতারা ফুটপাত দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে বিধায় ফুটপাত থেকে সরে সড়কে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানায় পথচারীরা।

নূর হোসের নামের এক পথচারী দৈনিক ফেনীকে বলেন, ফুটপাত দিয়ে মানুষ হাঁটা-চলা করবে কিন্তু ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা তা দখল করে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফুটপাতে হাঁটার উপায় না পেয়ে ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে।

আফতাব মিঞা নামের শহরের আরেক বাসিন্দা দৈনিক ফেনীকে বলেন, প্রতিদিনই ফুটপাত দখল করে দোকান বসানো হয়। ফলে রাস্তার মাঝে দিয়ে হাঁটতে হয়, যা খুবই বিপজ্জনক। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

একই ধরনের অভিযোগ করেন ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাশেদ। তিনি দৈনিক ফেনীকে বলেন, শহরের বেশিরভাগ ফুটপাতই দখল হয়ে গেছে। সড়ক পারাপারের সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে পথ চলতে হয়। বিশেষ করে ব্যস্ত সময়গুলোতে বিষয়টি অসহনীয় হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে ফুটপাত দখল করা ভ্রাম্যমাণ হকার ও ব্যবসায়ীরা বলেন, ফুটপাত থেকে সরে গেলে তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ফুটপাতের ব্যবসা তাদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কোনো হকার জোন বা বিকল্প ব্যবসার ব্যবস্থা না থাকায় তারা ফুটপাতেই ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানায়।

ফারাবী ইসলাম জুনায়েদ নামের এক ব্যবসায়ী দৈনিক ফেনীকে বলেন, আমরা এখানে না বসলে আমাদের পরিবার না খেয়ে মরবে। দোকান ভাড়া করে ব্যবসা চালানোর সক্ষমতা নেই বলে ফুটপাতে বসে দোকান করতে বাধ্য হচ্ছি। আগে পৌরসভার লোকজন ১০০ টাকা করে চাঁদা নিত। এখন চাঁদা দিতে হচ্ছে না। যে যার মতো করে ব্যবসা করছে।

ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন দৈনিক ফেনীকে বলেন, ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষের আনাগোনা বেশী থাকে যার কারণে ব্যবসা ভাল হয়। ফুটপাত ছাড়া আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। পথচারীদের কষ্ট হয় জেনেও পরিবার খরচ জোগাড় করতে ফুটপাতে ব্যবসা করতে হয়।

আলমগীর নামের আরেক ব্যবসায়ী দৈনিক ফেনীকে বলেন, ফুটপাত দিয়ে শত শত মানুষের আনাগোনা থাকে। দোকান সাজিয়ে বসলে যে যার মতো করে এসে পণ্য ক্রয় করে। ফুটপাত ছাড়া অন্য কোথাও বসলে তেমন আয় হয় না।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার দৈনিক ফেনীকে বলেন, পৌরসভার দায়িত্বরত প্রশাসককে বলা হয়েছে ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করার জন্য। দখলমুক্ত করতে যা যা করণীয় বিধি মোতাবেক সেগুলো করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।