১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ।। মোঃ ওমর ফারুক ।।
ফেনী সদর উপজেলার ৯নং লেমুয়া ইউনিয়নের গ্রামীণ রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিমে লেমুয়া ইউনিয়ন অবস্থিত। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ১০ থেকে ১৫টি রাস্তা যেমন লেমুয়া বাজারের পাশে ব্যাপারীকোনা বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তা,লেমুয়া স্কুলের পাশ হয়ে মিরগঞ্জ রাস্তা,ঘাটঘর থেকে মজুমদার হাট রাস্তা,লেমুয়া বাজার থেকে সওদাগর পাড়া হয়ে জলদাস বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা, দক্ষিণ লেমুয়া থেকে কেরানিয়া রাস্তা, আক্তার পুকুরপাড় থেকে চানপুর রাস্তা, লেমুয়া থেকে আনন্দপুর রাস্তা, ভাঙার তাকিয়া থেকে চানপুর রাস্তা, মাস্টার পাড়া হয়ে কসকা রাস্তা,লেমুয়া স্টিল ব্রিজ হয়ে মমতাজ মিয়ার রাস্তার বেহাল অবস্থা। রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানা খন্দে গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যাত্রী ও জনসাধারণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে মহাসড়কের লেমুয়া ব্রিজ থেকে নামলে বাজারের আগে অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির দুই পাশে জায়গা দখল করে বিশাল বালুর পাহাড় গড়ে তোলেন প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন। প্রতিদিন এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপর প্রায় ৬০ থেকে ৮০ টি বড়বড় হাইড্রোলিক পিকআপ, ট্রাক রাস্তা দখল করে বালু লোড করার ফলে রাস্তায় চলাচলরত মটর চালিত রিকসা, সিএনজি চালিত অটোরিকসা ও টমটম চালকরা যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই সাথে জনসাধারন ও স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এদিকে রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কোন মাথা ব্যাথা নেই বলে স্থানীয়রা জানান। এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলি দিয়ে প্রতিদিন ১০০ রিকসা, ৩ থেকে ৪শ’ সিএনজি চালিত অটোরিকসা, টমটম চলত। এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫ টি গাড়ি রাস্তায় চলে। রাস্তা গাড়ি চালানোর অনুপযোগী হওয়ায় অন্য লাইনে গাড়ি চালায় বলে কয়েকজন গাড়ি চালক জানান।
স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তাঘাটের বিষয় নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি গরম হয়ে যান। যখন হবার তখন হবে শুধু শুধু ঝামেলা করেন কেন। দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন। তার আচরণে ক্ষুদ্ধ ইউনিয়নবাসী।
তারা আরও বলেন, লেমুয়া ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের কাঙ্খিত উন্নয়ন গত ১০ থেকে ১২ বছরেও আমরা চোখে দেখেনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বলেছি তারা রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হবে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা বলেন সবার আগে আপনার এলাকার রাস্তা করে দেব। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। কিন্তু ভোটের পরে তাদের আর দেখা যায় না।
বয়োবৃদ্ধ হাসমত আলী বলেন, লেমুয়া মমতাজ মিয়ার হাট রাস্তার ১৫ বছরেও কোন কাজ হয়নি। রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে দোলা জমিনের মতন দেখা যাচ্ছে। ভাই সিএনজিতে উঠলে কোমরে ব্যাথা হয়ে যায়। প্রতিবেদককে বলেন, আমনেল্লাই দোয়া করমু বালা করি সংবাদ করেন। যেন রাস্তা অই যায়।
এসব বিষয়ে জানতে লেমুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাছিমকে মোবাইলে অনেকবার কল দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন।
এ বিষয়ে ফেনী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আলম পাটোয়ারী জানান, লেমুয়া ইউনিয়নে তিনটি রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।