বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত তিনটের দিকে নামাজ পড়তে উঠেছিলেন ফেনী শহরের পাঠান বাড়ি রোডের মনির উদ্দিন সড়কের তাসপিয়া ভবনের বাসিন্দা এক মহিলা। নিচতলায় অস্বাভাবিক আওয়াজ শুনে দরজা খুলে বাইরে গিয়ে তিনি দেখতে পান ভবনের কেয়ারটেকার মেঝেতে পড়ে থাকা রক্ত পরিষ্কার করছে। বিষয়টি তিনি পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা নিচে নেমে শুনতে পান ভবনের সেফটি ট্যাংকের ভেতর হতে গোঙানির আওয়াজ বের হচ্ছে। ট্যাংকের মুখ খুললে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবক পড়ে আছে।
ঘটনার শিকার মোঃ শাহরিয়ার ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের ভূঁঞা বাড়ির আমান উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ওই ভবনের কেয়ারটেকার মোঃ শাহিনকে আটক করেছে। তল্লাশী চালিয়ে তার কক্ষ হতে রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার করেছে। আটক শাহিন সম্পর্কে ওই ভবন মালিকের ভাগিনা হন।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আতোয়ার রহমান জানান, আহত যুবকের অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা এলে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে।
ওই ভবনের বাসিন্দা তানভীর রায়হান জানান, আমার আম্মা রাতের বেলা নামাজ পড়তে উঠে বিষয়টি টের পেয়ে আমাদের জানান। পরে আমরা নিচে গিয়ে কেয়ারটেকারকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে সন্দেহজনক আচরণ করতে থাকে। তার আচরণ দেখে মনে হয়, সে কাউকে খুন বা খুন করার চেষ্টা করছে। এসময় ভবনের সেফটি ট্যাংকের ভেতর হতে গোঙানির আওয়াজ আমাদের কানে আসে। দেখতে পাই সেখানেও রক্তের দাগ লেগে আছে। পরে এর কারণ অনুসন্ধানে ট্যাংকের ঢাকনা খুললে দেখতে পাই, রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবক পড়ে আছে। তাকে টেনে তুলে পুলিশকে খবর দেই আমরা। পুলিশ এসে আহত যুবককে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় ও কেয়ারটেকার শাহীনকে আটক করে।
তানভীর জানান, এলোপাতাড়িভাবে তার মাথায় কোপানো হয়েছে। অবস্থা আশংকাজনক বিধায় শুক্রবার দুপুরে তাকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওই ভবনের আরেক বাসিন্দা জানান, আহত যুবকটি মাঝে মাঝে কেয়ারটেকার শাহীনের কাছে আসতেন। গতকাল রাতেও তিনি আসেন। তার সাথে একটা মোটর সাইকেল ছিলো। ওই কেয়ারটেকারের সাথে যুবকের কি সম্পর্ক ছিল তা আমরা জানিনা। তবে কারা কি কারণে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে তা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। এ ঘটনায় কেয়ারটেকারের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মাহতাব উদ্দিন মুন্না বলেন, রাতের শেষাংশে এলাকার একজন ফোন করে বলেন ওই ভবনে ডাকাত হামলা করেছে। পরে বিস্তারিত জানতে পারি, ওই ভবনের ভিতর একজন যুবককে মারাত্মকভাবে জখম করে ট্যাংকির ভেতর ফেলে দেয়া হয়েছে।