‘জমিতে পাকা ধান আছে কিন্তু তা কেটে ঘরে তুলবার মত সামর্থ্য এই মুহূর্তে আমার নেই। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রাতের আঁধারে বউ ঝি নিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলবো।’
-কথাগুলো বলছিলেন বাঁলিগাও ইউনিয়নের বর্গাচাষী এনামুল করিম। বেতাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বর্গায় চাষকৃত ৩২ শতক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন এ কৃষক।
কৃষক এনাম বলেন, বছরের অন্যান্য সময় টুকটাক কিছু কাজ করি সাথে কৃষিকাজে যা আসে তাতে জীবন ভালোই চলে। বর্তমানে সবকিছুই বন্ধ, কোনো সঞ্চয় নেই। যা ছিল তা সবই খেয়ে ফেলেছি। এই মুহূর্তে ধান তুলে আনার মত অবস্থা আমার নেই। কিন্তু জমিতে ধান ফেলে রাখাও সম্ভব না, নষ্ট হয়ে যাবে। গতকাল রাতের অন্ধকারে তাই ঘরের মহিলাদের নিয়ে ধান কাটতে জমিতে যাই, দিনে নারীর পর্দা ও লোকজন এড়িয়ে কাজ সম্ভব নয়।
এনাম বলেন, এ খবর আমাদের এলাকার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা শুসেন বাবু জানতে পেরে ফোন করেন। তিনি আমাদের জমি ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন। সকাল ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আমাকে জানান, আজ সকালে ছাত্রলীগের ছেলেরা ধান কাটতে আসে।
ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষক এনামুল করিম আবেগ আপ্লুতকন্ঠে বলেন, আমার জীবনে এত বড় উপকার কেউ কখনো করেনি।
ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুশেন চন্দ্র শীল জানান, মাঠে মহিলাদের নিয়ে ধান কাটার কথা শুনে আমি ছাত্রলীগ যুবলীগ এলাকার মানুষকে বলি তাকে সহায়তা করতে। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব, অসহায় মানুষের প্রতি এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ছাত্রলীগ যেন কৃষকের পাশে থাকে। বিশেষ করে যারা বর্গাচাষী, যারা অসহায় তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য, ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়ার জন্য ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, করোনা মোকাবেলায় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুদ্ধে নেমেছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব সময় প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এটি আমাদের জন্য যুদ্ধ, ছাত্রলীগের যারা ধান কাটছে তারা যোদ্ধা।
তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তে সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও আমরা বিভিন্ন জায়গায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছি।