ফেনীর সর্বস্তরের মানুষের শোক ও শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানানো হলে প্রথিতযশা আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ এডভোকেট জাহিদ হোসেন খসরুকে। আজ শুক্রবার (২১ মে) বাদ জুমা ফেনীর ঐতিহাসিক মিজান ময়দানে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাযা শেষে শহরের উকিলপাড়ার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির এই সহ সভাপতিকে।
তাকে শেষ বিদায় জানাতে মিজান ময়দানে জড়ো হন জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, আইনজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সাধারণ মানুষ। জানাযা পূর্বে মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত রাখেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। এসময় তিনি মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। নিজাম হাজারী বলেন, এডভোকেট খসরুর সাথে সকলেরই চমৎকার সম্পর্ক ছিল। তিনি খুব সদালপী ছিলেন। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার পদচারণা ছিল। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা প্রশাসক মো: ওয়াহিদুজজামান, ফেনী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার মজুমদার তপন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া ভূঞা, আইনজীবী এডভোকেট শাহজাহান সাজু। মরহুমের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বড় ভাই এডভোকেট জাকির হোসেন।
জানাযা শেষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায় জেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী যুবলীগ, জেলা পরিষদ, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, ফেনী পৌরসভা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এতে ইমামতি করেন ফেনী কোর্ট মসজিদের ইমাম মীর হোসেন। জানাযায় ফেনীর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানবৃন্দ, পৌর মেয়রবৃন্দ, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
তার মৃত্যুতে ফেনীর রাজনৈতিক, আইনজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে শোকের ছায়া। এডভোকেট জাহিদ হোসেন খসরুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ মরহুমের সহকর্মীরাসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। মরহুমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়েছেন তারা।
ব্যক্তিগত জীবনে খসরু ছিলেন ২ কন্যা সন্তানের জনক। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যাসহ আত্মীয় স্বজন, অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
এডভোকেট খসরুর জীবন বর্ণাঢ্যময়। তিনি দীর্ঘদিন জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ছিল তার দৃপ্ত পদচারণা। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ফেনী জেলার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ছিলেন সংলাপ নাট্য গোষ্ঠির কর্ণধার।
গত জানুয়ারির ২৬ তারিখ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিছুদিন আগে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তার হ্রদপিন্ডে বাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউতে নেয়া হয় তাকে। দুই সাপ্তাহ ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার রাতে অন্তিম গন্তব্যে যাত্রা করেন ফেনীর সর্বমহলে সমাদৃত এই কীর্তিমান পুরুষ।