ফেনী শহরের পাঠানবাড়িতে তাসপিয়া ভবনে সংঘটিত ইউনুছ বাবু হত্যার দায় স্বীকার করেছে কেয়ারটেকার শাহীন। বুধবার (২১ অক্টোবর) ফেনী জজ আদালতের জৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোঃ জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়।
জবানবন্দীতে এ হত্যাকান্ডে নিজের দায় স্বীকার করেছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শহর ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক সুদীপ রায়।
তিনি জানান, দুই দফায় শাহীনকে ৯ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। আজ তা শেষ হলে শাহীনকে আদালতের হাজির করা হয়। এদিন আদালতে শাহীনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন⇒ ‘চাঞ্চল্যকর বাবু হত্যা মামলা : শাহীনের ৭দিনের রিমান্ড’
একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করে বাবু হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে শাহীন জবানবন্দিতে জানায়, ৮ অক্টোবর রাতে সে, বাবু ও শাহরিয়ার তার কক্ষে অবস্থান করছিল। রাত দুইটা নাগাদ শাহরিয়ারের সাথে তার তর্কতর্কি হয়। বাবু তখন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সে শাহরিয়ারকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তখন শাহরিয়ারের চিৎকার শুনে বাবু ঘুম থেকে জেগে যায়। তখন শাহীন নিজেকে বাঁচানোর জন্য দা ও হাতুড়ি নিয়ে বাবুর উপর হামলা করে। এতে বাবু লুটিয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাদের এক এক করে ওই ভবনের সেপটিক ট্যাংকে নিক্ষেপ করে এর ঢাকনা আটকিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন⇒ ‘আলোচিত বাবু হত্যাকান্ড : এখনো লেগে আছে রক্তের দাগ’
এর আগে কেয়ারটেকার শাহীনের কক্ষ থেকে বিছানার চাদর, তোয়ালে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর বাবুর পরনের প্যান্ট, বেল্ট, ছোরা, দা-হাতুড়ি, শাহীনের টি-শার্ট, দুটি মানিব্যাগ ও বাবুর ব্যাবহৃত আইফোন উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে রক্তমাখা আলামতগুলো বিশ্লেষণের জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন⇒ ‘রাকিবই বাবুকে হত্যা করেছে : মায়ের অভিযোগ’
পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, ফেসবুকের মাধ্যমেই শাহীনের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বাবুর। সে সূত্র ধরে শাহরিয়ারের সাথেও তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। নারীর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিজের কক্ষে নিয়ে আসে শাহীন।
আরও পড়ুন⇒ ‘বাবুর মাথায় ছিল ৫টি কোপের দাগ, গলায় রশি পেঁচানো’
অন্যদিকে এ ঘটনায় আহত শাহরিয়ার এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুদীপ রায় জানান, সে এখন স্বাভাবিক হয়নি।
আরও পড়ুন⇒ ‘তাসপিয়া ভবনের সেপটিক ট্যাংকে মিলল আরও এক যুবকের লাশ’
গত শনিবার (১০ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টার দিকে তাসপিয়া ভবনের সেফটি ট্যাংক হতে আর্কিটেক্ট ডিজাইন নিয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া বাবুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এর আগের দিন শুক্রবার ভোরে ওই ভবনের সেপটিক ট্যাংক হতে মোঃ শাহরিয়ার নামে আরও এক যুবককে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফেনী জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।