করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকালীন সময়ে জনগণের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করায় ফেনীর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মকর্তাচারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফেনী-১ ও ফেনী-২ আসনের সাংসদ শিরীন আখতার ও নিজাম উদ্দিন হাজারী।
আজ রবিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় ফেনী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দুই সাংসদ।
সভায় বক্তব্য প্রদানকালে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নিজাম হাজারী বলেন, করোনা মহামারীতে আপনারা জীবন বাজি রেখে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
সভায় উপস্থিতির উদ্দেশ্যে বলেন, চাকরি ক্ষেত্রে যেখানেই যাবেন, তখনই নিজের জেলা মনে করে কাজ করবেন। নিজের জেলা মনে করে আন্তরিক হয়ে কাজ করলে কোন সমস্যা থাকবে না।
সকল দপ্তর প্রধানদের অনুরোধ করে সাংসদ বলেন, আপনাদের যে দায়িত্ব, সে দায়িত্ব পালনে জেলা প্রশাসকসহ আমাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবেন। কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার আগে জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করে তারপর কাজ করবেন, তাহলে কোন সমস্যা হলে আপনাদের একার উপর যাবে না। এসময় তিনি করোনাকালীন সময়ে নিবিড় পরিশ্রম করে কাজ করে যাওয়ায় জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান সহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান।
সভায় ফেনী-১ আসনের সাংসদ শিরীন আক্তার বলেন, করোনার কারণে আমার এই বছরে তেমন ফেনী আসা হয়নি। কিন্তু ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম হাজারী করোনার মধ্যেও কাজ করেছেন।
মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ‘কেউ থাকবেনা গৃহহীন’ বাস্তবানয়নে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহবান জানান এমপি শিরীন আখতার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সভায় শুভপুর ব্রীজ, রেজুমিয়া ব্রীজগুলো দ্রুত সংস্কার এর জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগকে অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া আগামী ৩ বছরের একটি পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করার জন্য কৃষি বিভাগকে অনুরোধ করেন। ছাদকৃষিসহ বিভিন্ন রকম ফল-ফলাদির গাছ লাগানোসহ সেগুলো পরিচর্যা করার আহবান জানান।
সভায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে বলেন শিরিন আখতার।
সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান অবৈধ খাল খননে ব্যবস্থা নিতে ক্ষুদ্র সেচ দপ্তরকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, বালু মহালগুলোতে আমরা যতটুক জায়গার জন্য ইজারা দিয়েছি ততটুক পর্যন্ত বালুমহল। এর বাইরে কেউ বালু তুললে সেগুলো অবৈধ। ইজারার বাইরে বালুমহলে অবৈধ বালু উত্তোলন হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করেন তিনি।
এছাড়াও নদীর কোন অংশ ফেনীর এবং কোন অংশ মীরসরাইয়ের তা যাচাই করে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
এসময় জেলা প্রশাসক প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন, সড়ক সংস্কার, ধানের পাশাপাশি কৃষিতে অন্যান্য ফল উৎপাদনসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে দিক নির্দেশনামুলক পরামর্শ দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোছাঃ সুমনী আক্তারের সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডাঃ মীর মোবারক হোসাইন, ফেনী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল কান্তি পাল, সোনাগাজী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকম, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু দাউদ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকোশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান, ফেনী ফায়ার বিগ্রেড ও সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারি পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দীসহ ফেনীর সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ফেনীর সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।