দাগনভূঞা উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় ৯৩৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৮৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ১০ হাজার ৩৫৩ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৯২০ জন কৃষক আউশ, ৭ হাজার ৫৪৩ জন কৃষক আমন বীজতলা, ৬৫০ জন কৃষক আমন, ১ হাজার ১৮৫ জন কৃষক শরৎকালীন সবজি, ৪৫ জন কৃষকের ফলবাগান ও ১০ জন কৃষক আদা চাষ করেছিলেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

একই সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১ হাজার ৫২ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যায় ৯৩৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮২৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১০৫ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে ৪৮২ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা, ২৭৮ হেক্টর রোপা আউশ, ২০৪ হেক্টর আমন, ৮০ হেক্টর শরৎকালীন শাকসবজি, ৫ হেক্টর ফলবাগান ও ০.৫ জমির হেক্টর আদার আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামের অর্গানিক ভেজিটেবলের স্বত্বাধিকারী হাসান আহমেদ বলেন, বন্যায় আমি ১৭২ শতক জমিতে লাগানো ধান ও শাকসবজিসহ সকল ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২০ শতক জমিতে ধান, ৩০ শতক জমিতে অর্গানিক ভেজিটেবল, ১০ শতক জমিকে পলি শেডের মধ্যে অন্যান্য সবজি এবং ১২ শতক জমিতে পেঁপের আবাদ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

রাজাপুর ইউনিয়নের বাতশিরি গ্রামের কৃষক আবু ইউছুফ বলেন, ২০ শতক জমিতে ধানের বীজতলা ও ১০০ শতক জমিতে বন্যার আগে ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। বন্যায় সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। যে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো দিয়ে নিজের জমিতে রোপণ করার পরও আরও প্রায় ৪০০ শতক জমিতে রোপণ করা যেতো। বাকী চারাগুলো স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করতে পারতাম, কিন্তু সব শেষ হয়ে গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। সরকারিভাবে কৃষকদের সহায়তা না পেলে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, অত্র উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান। তাদের মাঝে সার বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।