জাল এসএসসি সনদ দাখিল করে ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন মো. আবু তাহের নামে এক ব্যক্তি। বিষয়টি উদ্ঘাটনের পর বরখাস্ত করা হয় তাকে। এবার তার তার বিরুদ্ধে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দাগনভূঞার আমলি আদলতের বিচারক মোহাম্মাদ মিনহাজ উদ্দিনের আদালতে সোমবার (১৯ মে) দুপুরে মামলা দায়ের করেন ডাক বিভাগের কেন্দ্রীয় উপ-বিভাগের দাগনভূঞার ডাক পরিদর্শক মো. খালেদ হোসেন। তিনি বলেন, আসামি চাকরির আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং জাল সনদ দাখিল করে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কেটিএম হাট মোহাম্মাদ নগরের আমিন উল্যাহর ছেলে মো. আবু তাহের। তিনি দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের এতিমখানা বাজার ডাকঘরে পোস্টম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি গোবিন্দ চন্দ্র দাস জানান, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে জেলা সিআইডি পুলিশকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট মো. আবু তাহের পোস্টম্যান পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি ১৯৮১ সালে তৃতীয় বিভাগে এসএসসি পাস করেছেন। আবেদন গ্রহণ করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি তদন্তে গিয়ে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে সনদের সত্যতা যাচাই করা হয়। বোর্ড নিশ্চিত করে মো. আবু তাহের যে সনদ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ জাল।
তদন্ত শেষে ১ যুগ পর ২০২১ সালের ১৬ জুন তাকে সরকারিভাবে বরখাস্ত করা হয়। ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সময়কালের মধ্যে তাহের সরকারি তহবিল থেকে প্রায় ৬ লাখ ১৩ হাজার ৯০১ টাকা বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বাদীপক্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছে, আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষতির প্রতিকার নিশ্চিত করা হোক। আবু তাহেরের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, বিশ্বাসভঙ্গ ও জাল দলিল ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।