ফেনীতে ৪৬তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা
জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তায় শিক্ষার্থীদের ‘পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন’
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিজ্ঞানচর্চা আর উদ্ভাবনী ভাবনায় জমে উঠেছে ফেনীর ৪৬তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে অংশ নিয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীরা। এবারের মেলায় উপস্থাপিত হয়েছে ৪৫টি প্রকল্প। যার মধ্যে বেশিরভাগই জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ, নিরাপত্তা ও শক্তির সংকট মোকাবেলায় পরিবেশবান্ধব এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর প্রযুক্তির ব্যতিক্রমী চিন্তা নিয়ে তৈরি।
ফেনী শাহীন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা এনেছে ‘জলচাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ নামের ব্যতিক্রমী প্রজেক্ট। যা সদর উপজেলা পর্যায়ে প্রথম হয়েছিল। যেখানে আধুনিক পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
দলের দলনেতা শাফায়েত উল্লাহ বলেন, “আমরা এমন একটি শহরের কথা ভাবছি যেখানে থাকবে না কোনো বর্জ্য বা দূষণ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় থাকবে ট্রেস সিস্টেম, বিশুদ্ধকরণ প্রযুক্তি, বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনা এবং কারখানার ধোঁয়া পরিশোধনের মাধ্যমে গ্রাফিন উৎপাদন করে তা বিক্রি করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পরিকল্পনা করেছি।”
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য দূষণমুক্ত এলাকা নির্মাণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যবস্থা করা, এতে দূষণমুক্ত করতে যে ব্যয় হবে তা গ্রাফিন বিক্রি করে আয় করা যাবে। বিদুৎ উৎপাদন করে দেশের বিদুৎ সঞ্চালনে সহযোগিতা করা যাবে। এ প্রজেক্টটি নির্মাণে বিদ্যালয়ের ইফরানুল ইসলাম, ফারহান হোসেন, আবির বিন সিদ্দিক, মাহতাব উল ইসলাম আদিব, জোবায়ের বিন আলা, মোহসিন বিন মান্নান, সাইদুল হক মাহি, আরফিন বিন সেলিম সহযোগিতা করেছে।
খণ্ডল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট ‘পরিবেশবান্ধব আদর্শ পরশুরাম’ মেলায় প্রশংসা কুড়িয়েছে। তারা পচনশীল বর্জ্য, গবাদি পশুর গোবর এবং মানুষের মল থেকে বায়োগ্যাস ও ইউরিয়া সার উৎপাদনের কৌশল উপস্থাপন করেছে।
দলনেতা জান্নাতুল ফাহিমা বলেন, আমরা বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সৌরবিদ্যুৎ, আইসোলেশন ব্যবস্থাসহ এমন একটি মডেল তৈরি করেছি, যা বাস্তবায়ন করা গেলে পরশুরাম এলাকার জীবনমান উন্নত হবে।
জান্নাতুল ফাহিমার পাশাপাশি এ প্রজেক্টে কাজ করেছে রুবাইয়া আফরিন রিতু,রেজাউদ দোলা রাফি এবং নিলয় বণিক।
দাগনভূঞা একাডেমির শিক্ষার্থীরা ‘দ্য সেইফ সিটি’ নামে একটি প্রজেক্ট এনেছে, যেখানে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তাব্যবস্থা, দূষণমুক্ত পরিবেশ এবং নাগরিক জীবন সহজ করার নানা পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।
ফুলগাজী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেলায় উপস্থাপন করেছে ‘নেগিভেশন কার’। এটি সম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর গাড়ি, যা চলতে পারে আল্ট্রাসনিক সেন্সরের মাধ্যমে।
শিক্ষার্থী পার্থিব সেন বলেন, “এই গাড়িতে কোনো জ্বালানির দরকার নেই। এটি কার্বন নিঃসরণ রোধ করে। বিশেষভাবে অন্ধ ও শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষের চলাচলে সহায়ক হবে, এমনকি মহাকাশ গবেষণায়ও এটি ব্যবহারযোগ্য।”
অন্যদিকে সরকারি পাইলট স্কুলের শিক্ষার্থীদের ‘এরোড্রেপ টেকনোলজি’ নামের ড্রোন প্রকল্পটি সামরিকপ্রযুক্তিতে দেশীয় উদ্ভাবনের নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত দেয়। ড্রোনটিতে রয়েছে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম, থার্মাল ক্যামেরা, এআই প্রযুক্তি, এবং জিপিএস ট্র্যাকিং সুবিধা।
দলনেতা আশরাফ বিন নিজাম বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধ থেকে শুরু করে পাহাড়ি অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ পর্যবেক্ষণ ও নির্মূলে এ ড্রোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রয়োজনে রিমোট সিস্টেমের মাধ্যমে ড্রোনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধ্বংস করাও সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এখানে রয়েছে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। কোন দেশ মিসাইল ছুঁড়লে সামরিক বাহিনীর রাডার তা বুঝতে পারলে এটি ২০ থেকে ২৫ কি.মি দূরত্বে এলে জিপিএস ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে এরোড্রপ চালু হয়ে যাবে এবং মিসাইলটিকে ধ্বংস করে দেবে। পাহাড়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন রয়েছে যা দেশের জন্য হুমকি। এ ড্রোনে থাকবে থার্মাল ক্যামেরা। পাহাড়ে কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চললে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ড্রোনটি সেগুলো ধারণ করে আগে থেকে মিলিটারিকে জানিয়ে দিতে পারবে। এ প্রযুক্তি বানাতে সহযোগিতা করেছে শিক্ষার্থী শান্ত দেবনাথ ও তগিদ তাহমিদ।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টগুলোতে ছিল বাস্তব সমস্যা সমাধানের দারুণ চিন্তা। অনেক প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, আবার কিছু প্রকল্প লক্ষ্য করেছে সামরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, এমন সৃজনশীল চিন্তা ও উদ্ভাবন শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তব প্রয়োগে রূপ দিতে তাদের বিজ্ঞানমনস্ক করতে এমন আয়োজন করা হয়েছে। জেলাপর্যায়ে সেরা প্রজেক্টটি বিভাগীয়পর্যায়ে অংশ নেবে। আজ প্রজেক্ট মূল্যায়ণে সেরাদের পুরষ্কার দেওয়ার মাধ্যমে ৩দিনব্যাপী এ মেলা শেষ হবে।
ফুলগাজীতে জেলা প্রশাসক
চলতি মাসেই টিসিবির উপকারভোগী চূড়ান্তের নির্দেশ
মোর্শেদ, ফুলগাজী
ফুলগাজী উপজেলায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ ( টিসিবি) এর অকার্যকর কার্ড চলতিমাসের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে টিসিবির বিষয়ে অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক বলেন, প্রকৃত হতদরিদ্র ও প্রাপ্য মানুষ এ কার্ড যেন পায়, নীতিমালা অনুযায়ী কার্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি উপস্থিত রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সকলের প্রতি আহবান জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে এ সম্পর্কিত কার্যক্রম সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করতে হবে। যেকারণে উপজেলাপর্যায়ের কাজ এমাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলায় ৪ হাজার ২২৭ টি কার্ডের মধ্যে অনলাইনে যাচাই-বাছাইয়ে ১ হাজার ১শ’র বেশি কার্ড বাতিল হয়ে যায়। উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, ১১শ কার্ডের অনলাইন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় একজনের জাতীয় পরিচয় পত্র অন্য জনের নামে হওয়ায় পরিচয় পত্র দুইবার অনলাইনে উপস্থাপন, মোবাইল নম্বরের ক্ষেত্রেও একজনের নম্বর দিয়ে একাধিক অন্তর্ভুক্তি, পেনশনের সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, স্কুলের শিক্ষক এবং সরকারের অন্যান্য সুবিধাভোগী রয়েছে।
বাকি ৩৩শ কার্ডের মধ্যে ৪০ শতাংশ প্রবাসী বা স্বাবলম্বী হওয়ায় এগুলো অনলাইনে অকার্যকর রয়েছে। এমন কার্ড বাদ দিলে ফুলগাজী উপজেলায় বর্তমানে সচল কার্ড রয়েছে প্রায় ১৯শ কার্ড।
মতবিনিময় সভায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফখরুল আলম স্বপন, সদস্য সচিব আবুল হোসেন ভুঞা, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল মজুমদার গোলাপ, উপজেলা জামায়াতের আমির মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, ফুলগাজী বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধি সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফুলগাজীতে সমলয় প্রদর্শনীর ধান কাটা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফুলগাজী
ফুলগাজীতে রোপণের সাড়ে তিন মাস পরে বোরো ধানের ব্লক প্রদর্শনীর ধান কাটার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিলখি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে বরো ধান কর্তন উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, অধিক মূল্যের শ্রম ও সময়ের অপচয় রোধে কৃষি ও কৃষকদের আধুনিকীকরণের দিকে এগিয়ে আসতে হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৫০ একর জমিতে ৮৯ জন কৃষক ব্রিধান-৯২ উৎপাদন করেছে। এতে হেক্টর প্রতি ৬.৮ টন ধান উৎপাদন যা বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী আবু হেনা মেহেদী।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি সমলয় পদ্ধতিতে বারো ধানের চারা রোপণ উদ্বোধন করেছিলেন জেলা প্রশাসক। ব্রিধান ৯২ জাতের ধানের বীজ অটোমেটিক সিড সোয়িং মেশিনের মাধ্যমে ট্রেতে বীজ বপন করা হয়। এরপর গত ২০ জানুয়ারি রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপন করা হয়। সে সময় উপজেলা কৃষি দফতর থেকে কৃষকদের ব্রিধান-৯২ জাতের ধান উৎপাদনের জন্য সার,বীজ, কীটনাশক বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলামের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোরশেদ আলম।
অনুষ্ঠানে হেক্টর প্রতি পানির সেচের মূল্য ৪ হাজার টাকা হলেও কানি প্রতি আড়াই হাজার টাকা নেওয়ায় অভিযোগ করে কৃষকরা নিলখিতে নির্মিত স্লুইচ গেইট কোন কাজে আসছে না বলে অভিযোগ করে খাল খননের দাবি জানান কৃষকরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাব্বির শিবলীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি দফতরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পুস্পেন্দু বড়ুয়া। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হোসেন ভূঞা, উপজেলা জামায়াতের আমির মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাঃ সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেনী জেলা অন্যতম প্রতিনিধি ওমর ফারুক প্রমুখ। এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ওই এলাকার প্রান্তিক কৃষক মোঃ ইয়াছিন, মোঃ ইসমাইল, জসিম উদ্দিন, সামছুল করিম, অহিদ উল্লাহ, মোঃ সেলিম ও মোঃ ইউছুফ নবী সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটানোর জন্য ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। সমলয়ে চাষাবাদের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারসহ ধানের উৎপাদন খরচ কমানো ও সময় সাশ্রয় হবে। একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ঘণ্টায় এক একর জমির ধান কর্তন করতে পারে। এতে কৃষকের খরচও কম হয়।
ফুলগাজী থানা পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ফুলগাজী থানা পরিদর্শন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে তিনি ফুলগাজী থানায় পৌঁছুলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। জেলা প্রশাসক এ সময় পুলিশ বাহিনীকে আন্তরিকতার সাথে কাজ অব্যাহত রাখার আহবান জানান। থানা পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহরিয়া ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে জেলা প্রশাসক ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টিসিবি কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি টিসিবি কার্যক্রমে গতিশীলতা ও প্রাপ্য নতুনদের অনলাইন ভেরিফিকশন করে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
মাকে কোপালো মাদকাসক্ত ছেলে
নিজস্ব প্রতিবেদক (ছাগলনাইয়া)
ছাগলনাইয়ায় লায়লা আক্তার (৫৫) নামক এক মায়ের মাথায় ধারালো দা দিয়ে সাত কোপ দিয়ে মারাত্মক জখম করেছে একমাত্র ছেলে মামুন চৌধুরী (২২)। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে ছাগলনাইয়া পৌরসভার দক্ষিণ সতর চৌধুরী বাড়িতে ঘটনাটি সংগঠিত হয়। ঘটনা পরবর্তী খবর পেয়ে অভিযুক্ত ছেলে মামুনকে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
স্থানীয় নাছির তালুকদার জানায়, আহত লায়লা আক্তারের স্বামী মিধন চৌধুরী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মাঝে ছেলে মামুন মানসিক ভারসাম্যহীন ও মাদকাসক্ত। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ইতোপূর্বে একাধিকবার মা ও বাবাকে পিটিয়ে আহত করে সে। গতকাল মায়ের নিকট টাকা চাইলে মা অপারগতা প্রকাশ করা মাত্রই সে দা দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করে।
আহত লায়লা আক্তারকে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরিবার সূত্র জানায়, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ৬০ মামলা, গ্রেফতার ৭৮
সাজ্জাদ রাকিব
ফেনী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৮ মে পর্যন্ত জেলাজুড়ে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। এসব ঘটনায় ৬০টি মাদক মামলা দায়ের করা হয় এবং ৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৫৯ বোতল ফেন্সিডিল, ১৬ কেজি ৯০০ গ্রাম গাজাঁ, ১ হাজার ৭৫৮ পিস ইয়াবা, বিয়ার ৪ বোতল এবং একটি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ১১ মামলা দায়ের এবং ১৩জনকে গ্রেফতার করা হয়।
একই সূত্র জানায় ফেব্রুয়ারি মাসে ফেন্সিডিল ৬ বোতল, গাজাঁ ৫ কেজি, ইয়াবা ২ হাজার ৩৭৪ পিস, বিদেশি মদ ২৪ বোতল, ক্রিস্টাল মেথ (আইস) ২০ গ্রাম এবং দুইটি চারাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয় ১৪ টি, গ্রেফতার করা হয় ১৬ জন অভিযুক্তকে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মার্চ মাসে মাদক ও চোরাচালানপণ্য উদ্ধার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ মাসে ফেন্সিডিল ২৫ বোতল, গাঁজা ৩৭ কেজি, ইয়াবা ১ হাজার ৭২৮ পিস, বিদেশি মদ ৩৬ বোতল, বাংলা মদ ২০ লিটার, বিদেশি টি মিক্স-৩৫ পেকেট, বিদেশি টুথপেস্ট ১৩০ প্যাকেট, ঔষধ ৫০ বোতল, মাদক পরিবহনে ব্যবহারিত দুটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় মামলা হয় ১৭টি, গ্রেফতার ১৯ জন। এপ্রিলে অভিযান চালিয়ে গাজাঁ ৪৯ কেজি ৫০৪ গ্রাম, ইয়াবা ১৪৫ পিস, বিদেশি মদ ৬৯ বোতল, বিয়ার ১০টি ক্যান, রেজিস্ট্রেশনবিহীন কালো রঙয়ের জীপ গাড়ি ১টি, রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি ৩ টি, মাদক বিক্রয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসবে ১৫ টি মামলা দায়ের করা হয় এবং ১৭ জন গ্রেফতার হয়।
চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত জেলা জুড়ে অভিযান চালিয়ে ৯ কেজি ৩৫০ গ্রাম গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট ১ হাজার ৪০০ পিস, বিদেশি মদ ১২ বোতল, রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি উদ্ধার করা হয়। এসবে মামলা হয় ৪টি, ১৩জনকে এসব অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা জানান, মাদক উদ্ধারে গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং জিরো টলারেন্স বজায় রাখা রয়েছে।
পরশুরামে বন্যায় ঘর হারান�