বাজারে ঈদের আগে হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে মুরগির দাম। ব্রয়লার ও সোনালি উভয় ধরনের মুরগির দামই গত কয়েকদিনের তুলনায় বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়েছেন। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগীর দাম বাড়াতে অন্য মুরগীও বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
শনিবার (২২ মার্চ) ফেনীর বড় বাজার, হকার্স মার্কেট ও বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০ থেকে ২২৫ টাকা, আর সোনালি মুরগি ৩০০-৩১০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিনে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আর প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ৩৫ টাকা বেড়েছে।
বড় বাজারের মুরগি বিক্রেতা খান সাহেব বলেন, ঈদ উপলক্ষে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে খামারিরা দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন। যার ফলে মুরগির দাম বেড়েছে।
আরেকজন মুরগী বিক্রেতা বলেন, ২-১ দিন যাবত প্রত্যেকটি মুরগী বেশি দর দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ছোট-বড় মানভেদে ২১৫ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে নাজির রোডের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদ আসছে মানুষজন সবাই ফেনীতে আসছে। যার কারণে চাহিদাও বাড়ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগীর সরবরাহ কম। ব্রয়লার কম থাকাতে অন্যান্য মুরগী গুলোরও দামে বেড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মুরগী চাহিদার তুলনায় কম এটা মিথ্যা কথা৷ কম থাকলে বাজারে মুরগী থাকত না। পর্যাপ্ত মুরগী আছে। কেন দাম বাড়িতেছে তারাই ভালো জানে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি, কেউবা চাচ্ছেন ২২৫ টাকা। অথচ ২-১ দিন আগেও দাম ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালী মুরগীর ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা অব্দি দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও দেশী মুরগী ৬০০ টাকা, লাল মোরগ ৩১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রাতারাতি মুরগীর দাম এমন লাফ দেয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।তারা বলেন,এই যে রাতারাতি দাম বাড়ায়। এগুলো তো পূর্ব পরিকল্পিত। না হয় এক লাফে ৩৫ টাকা বাড়ে কীভাবে!
মুরগী কিনতে আসা হাসিনা আক্তার নামে একজন বলেন, এসময়ে এসে ব্রয়লার মুরগীর দাম বেড়ে যাবে ভাবিনি। সামনে ঈদ আসছে মানুষ তো কিনতে বাধ্য। যার কারনে যে যেভাবে পারছে দাম বসিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন। রমযানে দ্রব্যমূল্য অন্য বছরের তুলনায় স্বাভাবিক ছিল তবে এখন ঈদ কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট তৈরীর চেষ্টা চলছে। এটাকে প্রতিহত করতে হবে।
রবিন আলন নামে আরেকজন ক্রেতা বলেন, রমযানে সরকার সুনাম কুড়িয়েছে দাম স্বাভাবিক রেখে৷ এখন ঈদকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া সিন্ডিকেট বন্ধ করতেও কাজ করতে হবে। রমযানে জেলাপ্রশাসনের বাজার তদারকি ছিল প্রশংসনীয়। এবার মুরগীর সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে। তাহলে আরও সুনাম অর্জন করবে।
এ বিষয়ে জেলা পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরান হাসান বলেন, ঈদ আসলে চাহিদা বাড়ে। সেজন্য বাজারে দাম বাড়ছে। তবে খামারিদের ইচ্ছাকৃত দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। কারন কাঁচাবাজার তাকে বিক্রি করতেই হবে। কম দাম হলেও সে বিক্রি করে৷ কিন্তু চাহিদা মোতাবেক ঈদে, শবে কদরে কিছুটা দাম বাড়তি নেয় তারা।
তিনি বলেন, ১৮০ টাকা পাইকারি হলে খামারিরা আরও বাড়ার জন্য অপেক্ষা করে। খামারিরা বাধ্য না, তারা রেখে রেখে দাম বাড়ার অপেক্ষা করে। এসোসিয়েশনের কোন নির্দেশনায় কাজ হয় না। হলে ডিমের দাম লসে বিক্রি করতে হতো না। ঈদ আসে দাম একটু বাড়বে এটাকে লাগাম টানার কোন প্রক্রিয়া নেই। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।