‘নারী মানেই আত্মত্যাগ’
একটা শিশু জন্মের পর যখন তার বাবা শুনতে পায় কন্যা সন্তান হয়েছে ঠিক তখনই মুখটি ফ্যাকাশে হয়ে যায় (তবে সব বাবারা এমন না) কারণ কি জানেন? হ্যাঁ কারণটি হলো মেয়ে হলে তাঁকে বড় করে কোনো লাভ নেই কারণ তাকে পালতে এবং বিয়ে দিতেও মোটা অংকের টাকা খরচ হবে, মেয়ে হলে পরিবারের হাল ধরতে পারবে না,ধীরে ধীরে সেই মেয়েটি বড় হতে লাগলো।
স্কুলে ভর্তি করানো হলো,স্কুল শেষ হাই স্কুল জীবন শুরু হলো, মেয়েটির আশেপাশের প্রতিবেশীরা অনেকেই কানাঘোষা করে, মেয়েকে পড়াচ্ছে!! মেয়েকে পড়িয়ে লাভ কি! বিয়ে দেয় না কেন তাকে, সবসময়ই মেয়েটির মা আড়াল থেকে তার অনুপ্রেরণা যোগাতো, সেই থেকে মেয়েটিরও পড়াশোনার প্রতি বেশ আগ্রহ, শত বাঁধার পরও মেয়েটি কোনো রকমে এসএসসি পরীক্ষা দিলো, পড়াশোনায় বেশ ভালো ছিলো, রেজাল্ট বেরুলো, মেয়েটি জিপিএ-৫ পেলো,ঠিক তখনই মেয়েটি তার বাবার সাড়া পেলো, কারণ মেয়ে আজ বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে, তবে আড়ালে থাকা মেয়েটির মা আড়ালেই রয়ে গেলো, সবসময়ই কষ্ট করে মায়েরা কিন্তু ফলস্বরুপ গ্রহন করেন বাবারা। স্কুলের সকল শিক্ষকদের মুখে মুখে প্রশংসা, মেয়েটির বাবা এবার মেয়েটিকে বললো মা তোমাকে কলেজে ভর্তি করাবো, অনেক বড় হবে তুমি!!
মেয়েটিও অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে লাগলো,, কিন্তু বড় স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারলো না আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের মুখ বন্ধ করতে, কারণ কলেজে ভর্তি হওয়া মানে মেয়েটির চওড়া এক বয়স হয়ে যাওয়া, এবং নিমিষেই তার এত এত স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দিলো বিয়ে নামক শব্দটি, কারণ এত মানুষের কানাঘোষা শুনতে শুনতেও মেয়েটির বাবা না পেরে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দেয়, আসলে মানেই আত্মত্যাগ, নারী মানেই চোখবুঝে সহ্য করা, নারী মানেই অধিকার থেকে বঞ্চিত, ঠিক এভাবেই সামাজিক বিভিন্ন প্রথার কারণে শত শত নারী তাদের স্বপ্ন পূরণ এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত।
-লেখক
নুসরাত জাহান জেনিফা
শিক্ষার্থী, ইলেকট্রিক্যাল টেকনলোজি, ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট