বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাঁধ নির্মাণে ফেনীবাসীর যে যৌক্তিক দাবি তার প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সরকারের উচিত এখানে এসে দেখা এবং টেকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণ করে যুক্তিসঙ্গত প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ কাজে আমরাসহ দেশবাসী পাশে থাকবে।
গতকাল সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফেনী সফরকালে পরশুরাম উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বল্লামুখী বাঁধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে শহীদ শ্রাবণের কবর জেয়ারত ও উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শনের বিষয়ে তিনি বলেন, গত বর্ষা মৌসুমে এখানে লঙ্কাকাণ্ড ঘটেছে। লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বাঁধ দুই দেশের সীমান্তের মধ্যে পড়েছে। ভারতের অংশের ভাঙ্গার কারণে আমার দেশের মানুষ কষ্ট করছে এটি হতে পারে না। এ বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলতে হবে। সরকারকে এ বিষয়ে শান্তিপূর্ণ স্থায়ী সামাধান করতে হবে।
বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ নদীতে যেসকল বেড়িবাঁধ দেওয়া হয়েছে সেগুলোও ভেঙে গেছে। অতীতে এগুলাতে দুর্নীতি হয়েছে, তা না হলে বারবার ভেঙে পড়ত না। বৈজ্ঞানিকনীতি অনুসরণ করেনি। তারা লোভ করেছে, অপকর্ম করেছে। দুর্নীতি করে মানুষকে বছর বছর কষ্ট দিয়েছে। আমরা চাই এমন সরকার হোক গ্রাম থেকে শুরু করে সংসদ সব জায়গায় মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকবে, সততা থাকবে। যেখানে মানুষের আমানত খেয়ানত হবেনা। দেশের সম্পদ ব্যয় হবে মানুষের উন্নয়নের জন্য।
জামায়াতের আমির বলেন, এমন একটি নির্বাচন হতে হবে যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যর সাথে সব ভোটার ভোট দিতে পারে এবং সকল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়। সেটি দেশে এবং বিদেশে দুই জায়গায়তেই হতে হবে। কারণ নতুন বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসীদের বিশাল অবদান রয়েছে। নূন্যতম যে সংস্কার না হলে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে না, সেটি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
জুলাই আগস্ট বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, এতবড় পরিবর্তন হয়েছে এবং যারা এরজন্য ত্যাগ তিতিক্ষা করেছে, যাদের জন্য এ নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা ৩টি কাজকে প্রাধান্য দিয়েছি। শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আহত পঙ্গু যারা তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন। সেটি সরকারসহ সবাই মিলে করতে হবে। আমরা আমাদের সামর্থ অনুযায়ী কাজ করছি। দলীয়ভাবে আমরা যতটুকু সামর্থ তা করে যাচ্ছি।
এর আগে ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ইশতিয়াক আহম্মদ শ্রাবণের কবর জেয়ারত করেন তিনি এবং বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য দেন। ফুলগাজীতে এক পথসভায় তিনি বলেন, যে যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য সন্তানরা জীবন দিল সে যন্ত্রণা যাতে আর কোন শাসকের দ্বারা ফিরে না আসে সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। মানুষের সম্পদের দিকে যাতে কেউ কুনজর না দেয়। আমরা একটি সুন্দর মানবিক সম্মানের বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এসময় জেলা জামায়াত ও পরশুরাম উপজেলা জামায়াতের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।