আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। বছরের প্রথম দিনে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের পথচলা। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর এবার নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি বই ছাপা কার্যক্রম। এতে সারা দেশের ন্যায় ফেনীতেও এখনো এসে পৌঁছায়নি চাহিদা অনুযায়ী বই। নতুন শিক্ষাবর্ষে দেরিতে বই পাওয়া নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছেন চলতি মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে নতুন বই।
জেলা শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, ফেনীতে মাধ্যমিক ও মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৮ জন। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৬টি। কিন্তু ফেনীতে এখন পর্যন্ত বই এসেছে ৪৭ হাজার ৪০০টি।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এখন পর্যন্ত ফেনী সদরে মাধ্যমিকে ৯ম শ্রেণির তিনটি বিষয় করে ৩৪ হাজার ৫০০টি বই ও দাখিলে ৭ম শ্রেণির ১২ হাজার ৯০০টি বই এসেছে। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলায় মাধ্যমিকে ৯ম, ১০ম শ্রেণির শ্রেণির দুইটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত) ২৫ হাজার ৮০০টি বই ও দাখিলে ৭ম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত, ইংরেজি) ৮ হাজার ৪০০টি বই এসেছে।
মিজানুর রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে নতুন কারিকুলামে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এবার বছরের মাথায় আবার এটি বাদ হয়ে আগের কারিকুলাম শুরু হচ্ছে। যেখানে মাত্র এক বছর পড়েই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। তারমধ্যে বছরের শুরুতে বই পাচ্ছে না। সবমিলিয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছি।
সানজানা আক্তার নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী বলেন, বারবার কারিকুলাম পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। শিক্ষাবর্ষের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি সিলেবাস প্রণয়ন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা হলেও সুবিধা হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি বিষয়গুলো গুরুত্ব দেন আমরা উপকৃত হবো।
এ প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফি উল্ল্যাহ বলেন, এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসব হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলায় কিছু বই এসেছে। জেলায় চাহিদার সম্পূর্ণ বই আসতে আরও প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে।
এদিকে মাধ্যমিকের মতো এবার প্রাথমিকেও এখনো শতভাগ বই আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকে জেলায় মোট বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৬টি। তারমধ্যে এখন পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে। এছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির চাহিদার ৩ লাখ ১৬১টি বই এখনো আসেনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইও শিগগিরই আসবে। এবার বই নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই। শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিদ্যালয় থেকে বই সংগ্রহ করবে।