গেল ১১ জানুয়ারি দুপুরে সদর উপজেলার ফাজিলপুরে ইউনিয়নের রহিম উল্ল্যাহ সাহেবের বাজারে আলাদিন জুয়েলার্সে স্বর্ণ লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১ ভরি ৪ আনা স্বর্ণালংকার ও এক লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। ২১ জানুয়ারি নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর মুকসাইর গ্রামের মো. আলাউদ্দিন(৩০), চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা পীরখাইন এলাকার মো. ফরহাদ (৩৯), একই জেলার বাকুলিয়া কালামিয়া বাজারের মো. বাদশা চৌধুরী (২৩), কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কামাল্লা গ্রামের মো. সজিব প্রকাশ প্রকাশ শুক্কুর(২৬), একই জেলার মুরাদনগর মোল্লাপাড়ার মো. মিজান (২৮) এবং দেবিদ্বার পান্নারপুল এলাকার মো. শফিক সোহেল প্রকাশ দাঁতলা শফিক(৩২)।
পুলিশ সূত্র জানায়, সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় গ্রেপ্তার আসামি ফরহাদ ও বাদশা অন্যান্য দুই পলাতক আসামিসহ ঘটনার আগের দিন (১০ জানুয়ারি) ফাজিলপুর বাজারে এসে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে ওই দোকান দুপুরে বন্ধ করা ও পুনরায় খোলার সময় পর্যবেক্ষণ করে। এদিন দুপুরের খাবার শেষে মালিক দোকান খোলার পর চক্রের ৪ জন আলাদিন জুয়েলার্সে ক্রেতা সেজে ঢুকে। তখন আসামি ফরহাদ দোকান মালিকের সাথে দরদাম করে ১২০০ টাকা দিয়ে একটি নাক ফুল ক্রয় করে। ওই সময় ভেতরে থাকা অন্য ৩ জন দোকানের স্বর্ণালংকার কোথায় আছে ও ভেতরে শাটার কেটে সহজে কোন পথে প্রবেশ করা যায় তা দেখে নেয়। আলাদিন জুয়েলার্সের পাশের গলি, সেলুনসহ সামনের পথ, সবজির দোকান কিভাবে পাহারা দিতে হবে এবং চুরি করে কোন পথে সহজে বের হয়ে পালানো যাবে সেই পথ বাছাই করে নেয়।
সূত্র জানায়, পরিকল্পনা মোতাবেক ১১ জানুয়ারি দুপুরে আলাদিন জুয়েলার্স বন্ধ করে যাওয়ার পর চক্রের প্রধান বাদশার নেতৃত্বে যে যার মত অবস্থান নেয়। গ্রেপ্তার আসামি আলাউদ্দিন দোকানের শার্টারের তালা কাটে, অন্যান্য আসামি গলির পথে পাহারায থাকে, অন্যজন শফিক ব্যাগ নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার চুরি করে ব্যাগে ভরে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে ফাজিলপুর বাজার থেকে মহাসড়কে যায়। সেখান থেকে ফেনী হয়ে বাসযোগে তারা কুমিল্লায় পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়াল সোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানা, বাকুলিয়া থানা, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর, হোমনা, দেবিদ্বারসহ অন্যান্য এলাকা থেকে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় লুট হওয়া ৭৫ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ১১ ভরি ৪ আনা ও নগদ ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় মোট ১২ জনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
পুলিশ আরও জানায়, দেশের বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তার আসামি আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৭টি, মো. শফিকের বিরুদ্ধে ১৩টি, মো. বাদশার বিরুদ্ধে ৭টি, মো. ফরহাদের বিরুদ্ধে ৫টি, মো. সুমন প্রকাশ শুক্কুরের বিরুদ্ধে ৬টি ও মো. মিজানের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।