ফেনীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের জন্য জরুরী ব্যবহার সামগ্রী প্রদান করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ। গতকাল রোববার (৮ ডিসেম্বর) ফেনী সদর উপজেলার মরহুম খাইরুল আনোয়ার পেয়ারু জিমনেসিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহায়তা বিতরণ করেন চট্টগ্রামের বানৌজা ঈসা খান ঘাঁটির অধিনায়ক কমডোর মোস্তফা জিল্লুর রহিম খান। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অভিষেক দাশসহ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সহায়তা বিতরণকালে কমডোর মোস্তফা জিল্লুর রহিম খান বলেন, ফেনীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ এ সহায়তা প্রদান করেছে। এতে জেলার ৪টি স্কুল, ১টি কলেজ, ১১টি মাদ্রাসা, ৭টি মসজিদ, ৪টি এতিমখানা এবং ১২টি মন্দিরকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সহায়তা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে পানির মটর, আইপিএস, কম্পিউটার, গ্যাসের চুলা, ক্যামেরাসহ সিসি টিভি, প্যানেল সেট, সোলার প্যানেল, বৈদ্যুতিক ফ্যান, ওয়াটার ফিল্টার, ব্রেঞ্চ (ছোট ও বড়), বুক সেলফ, টেবিল, চেয়ার, মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম, নামাজের ম্যাট ও কার্পেট, কোরআন শরিফ, মসজিদ ও মাদ্রাসার কিতাব, ডিজিটাল ঘড়ি, ঢাক-ঢোল, হারমোনিয়াম, মাদল ছাড়াও মন্দিরের বিভিন্ন ব্যবহার সামগ্রী।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার কার্যক্রমের পাশাপাশি মেডিকেল টিম ও ৩৫ শয্যার ফিল্ড হসপিটাল স্থাপন করে বন্যার্ত মানুষকে চিকিৎসা এবং ওষুধ প্রদান করেছে নৌবাহিনী। বন্যায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘ ও নৌবাহিনীর সহায়তায় বিপুল পরিমাণ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পোশাক সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।
বন্যায় পুনর্বাসনে পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছে
- জেলা প্রশাসক
নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্যার পরে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি পুননির্মাণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১১০টি ঘর পুননির্মাণে পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোর সংস্কারে এগিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, বন্যায় তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতার জন্য প্রাপ্ত বরাদ্দ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নতুন বরাদ্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে বাকি পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে।
পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে দীর্ঘমেয়াদি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর পাশাপাশি কৃষি খাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রাস্তাঘাট পুননির্মাণে এলজিইডি এবং সড়ক বিভাগ কাজ শুরু করেছে, অন্যান্য দপ্তরগুলোও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।