৪ আগস্ট মহিপালে ছাত্র-জনতা হত্যাকা-ে একাধিক মামলার আসামি বাহারকে ধরতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছিল পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একাধিক ছদ্মবেশ ধারণের কথা জানান ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. বেলাল উদ্দিন। তিনি মহিপালে গুলিতে নিহত সাকিব (২১) ও মাসুদ (২০) হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

বেলাল উদ্দিন জানান, গোপন সূত্রে খবর পাই- আসামি আমির হোসেন বাহার রাজধানীতে হকি ফেডারশনে যাতায়াত করেন। খবর পেয়ে ফোন কলের তথ্যের সূত্র ধরে তার অবস্থানের ধারনা পাই। এরপর তাকে গ্রেপ্তারে ছদ্মবেশ ধারণ করি। আমি বাদাম বিক্রেতা সেজে হকি ফেডারেশনের আশপাশে অবস্থান নেই। উপপরিদর্শক আনোয়ার মানিব্যাগ বিক্রেতা সাজে। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী সেখানে বাহার না আসায় পুনরায় খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। খবর পাই, পুরানা পল্টনে একটি কুরিয়ার সার্ভিসে তিনি পণ্য সংগ্রহ করতে আসবেন। তাৎক্ষণিক সহকর্মী উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য সহকর্মীদের নিয়ে পরবর্তী গন্তব্যের কাছাকাছি অবস্থান নেই। কিছুক্ষণ পর রিকশায় চড়ে লুঙ্গি পরিহিত একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিসে আসে। মুখে মাস্ক থাকায় প্রথমে চিনতে অসুবিধা হলেও পরে নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি।

 

ফের ৩ দিনের রিমান্ডে বাহার

এবার মহিপালে নিহত সারোয়ার জাহান মাসুদ (২০) হত্যা মামলায় তিনদিনের রিমান্ডে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন বাহার। গতকাল সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহারের দশদিনের রিমান্ড আবেদন করেন এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক বেলাল উদ্দিন। আদালতে শুনানি শেষে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগমের আদালত। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মহিপালে গুলিতে সাকিব হত্যা মামলায় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত। রিমান্ড শেষে তাকে গতকাল আদালতে আনা হয়েছিল।

মহিপালে গণহত্যায় বাহারের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে সাকিব হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বেলাল উদ্দিন জানান, ৪ আগস্ট শহিদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, রামপুর ভূঞা বাড়ি সড়ক এলাকায় তার সেলফোন ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদে বাহার হামলার উদ্দেশ্যে লোকজন জড়ো করার কথা, পৌরসভায় হামলা পূর্ববর্তী সভায় নিজের উপস্থিতির কথা স্বীকার করেছে। গণহত্যায় একাধিক ব্যক্তির অংশ নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

একটি সূত্র জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে বাহার একাধিক ব্যক্তিকে ফোনে হামলার উদ্দেশ্য অস্ত্র আনতে নির্দেশ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, নিহত সারোয়ার জাহান মাসুদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, মাসুদের বুকে তিনটি গুলি লাগে, এতে তার মৃত্যু ঘটে।