জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী যে নৃশংস হত্যাকা- চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। তার বাবা শেখ মুজিব ও মানুষ হত্যা করে সংসদে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছে, বিশ্ববাসীর কাছে তা নিন্দিত হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) পল্টন ট্রাজেডি দিবস পালনের লক্ষ্যে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুঁইয়া আরও বলেন, ২০০৬ সালে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশব্যাপী তান্ডব চালিয়েছিল। পৃথিবী জুড়ে নিন্দিত হয়েছিল সে ঘটনা। ফ্যাসিবাদের প্রতিষ্ঠা ২০০৬ সাল থেকেই শুরু করেছিল তারা। শেখ হাসিনা হলো খুনী আর আওয়ামী লীগ হলো সন্ত্রাসী দল। তার বাবা শেখ মুজিব অতীতে সে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছিল। একজন রাষ্ট্র প্রধান মানুষ হত্যা করে সংসদে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে পারে তা ইতিহাসে নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটা শাখা নিষিদ্ধ হয়েছে তবে আওয়ামী লীগের সব শাখাকে নিষিদ্ধ করা উচিত। জামায়াত ইসলামকে শত নির্যাতন করা হলেও আমরা দমে যাইনি। যারা শহীদ হয়েছে তাদের চেতনা ধরে রাখতে হবে। দেশকে কল্যাণমুখী করতে আল্লাহর আইন কায়েম করা অব্দি জামায়াত ইসলামী কাজ করে যাবে। এসময় তিনি দেশ গড়ার কাজে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

জেলা জামায়াতের সদ্য নির্বাচিত আমির মুফতি আব্দুল হান্নান বলেন, বিগত ১৬ বছর যারা আমাদের আলোচনা করতে দেয়নি, সভা সমাবেশ করতে দেয়নি আজ আমরা সমাবেশ করছি কিন্তু তারা নেই। ২০০৬ সালে শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের লগি বৈঠা দিয়ে প্রস্তুত হতে বলেছিল। সেদিন তারা জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল। আওয়ামী লীগ আর এ বাংলায় ফিরে আসতে পারবে না, বিগত বছরে তারা যে জুলুম নির্যাতন করেছিল তার সুষ্ঠু বিচার বাংলার জমিনে কায়েম হবে।

কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য একেএম সামছুদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন নবনির্বাচিত ফেনী জেলা আমীর মাওলানা মুফতি আবদুল হান্নান, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক আবু ইউসুফ, জেলা প্রচার সেক্রেটারী আনম আবদুর রহিম, ফেনী শহর আমীর মোহাম্মদ ইলিয়াস, সদর আমীর মাওলানা নাদেরুজ্জামান।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা এড জামাল উদ্দিন, মাওলানা হারুনুর রশীদ, শহর সেক্রেটারী ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম, সদরের সেক্রেটারী অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন, ফারুক হোসেন আজাদ প্রমূখ। এসময় জামায়াত ইসলামী সদর ও শহর শাখার নেতাকর্মীরাসহ ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় ২৮ অক্টোবর নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী ও শহর ছাত্র শিবিরের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের নির্ধারিত দিনে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে দায়ী করে তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দ্বারা লগি-বৈঠা দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী ‘পল্টন ট্রাজেডি’ দিবস পালন করেছে জামায়াত।