ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ (৫৩) হত্যা মামলায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি হাজী রহিম উল্লাহসহ চারজনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শামসাদ বেগম তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্য আসামীরা হলেন সাবেক এমপি নিজাম হাজারীর পিএস ফরিদ মানিক, ফেনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি লিটন এবং ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক রিফাত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাজমুল হাসান জানান, উক্ত চারজনসহ মোট ৫ জনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। আদালত চারজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলার অপর আসামী সম্রাটের রিমান্ড আবেদন পরবর্তী শুনানীর পর আদেশ দেওয়া হবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসামীদের সকলেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ হয়। ওইদিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়াসহ আরও ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে তার অনুপস্থিতে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে স্ত্রী আছিয়া বেগম স্বামীকে সেদিন বাসায় আসতে নিষেধ করেন। জাফরও তার স্ত্রীর কথামতো সেদিন আর বাসায় যাননি। পরদিন ৪ আগস্ট দুপুরের দিকে জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডস্থ জেলা কারাগারের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর নিহত জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ২০৫ জনের নামোল্লেখ ও আরও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় উক্ত আসামীরা ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।