অর্থাভাবে সুচিকিৎসা করাতে পারছেন না গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ছাগলনাইয়ার মনুরহাট আলহাজ্ব আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মোর্শেদ। তার শরীরে ৩৬টি বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। ধার দেনা করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বুলেট বের করা হলেও এখনও তার বাম হাত ও পায়ে দুটি বুলেট রয়ে গেছে। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শাহরিয়ারের পিতা মোশারফ হোসেন জানান, অস্ত্রোপচার করতে যে পরিমাণ অর্থের দরকার তা জোগাড় করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে মোর্শেদ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। তার শরীর ৩৬ টি বুলেট ঢুকেছে। তিনি জানান, আমি কায়িক শ্রম দিয়ে সংসার চালাই। ছেলের চিকিৎসায় আমার ৫০ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে। তার শরীরের এখনো দুইটি বুলেট রয়েছে। বুলেট দুইটি অপসারণ করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা জোগাড় করা আমার পক্ষ কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আহত শাহরিয়ার মোর্শেদ দৈনিক ফেনীকে জানায়, গত ৪ আগস্ট সকাল থেকে আমি মহিপালে আন্দোলনে অংশ নেই। ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হাতে অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। কিছু বুঝে উঠার আগে ছাত্রলীগের ছোঁড়া গুলি আমার সমস্ত শরীরে লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় আমি জ্ঞান হারিয়ে সড়কে লুটিয়ে পড়ি। পরে কিছু ব্যক্তি আমাকে ধরে একটি ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। বেলা ৩টার পর আমার জ্ঞান ফিরে। তখন শহরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ছাগলনাইয়ায় আসতে পারিনি। পরে সন্ধ্যার পর অন্ধকারে বাড়িতে আসি। ঘটনার দুইদিন পর ফেনী সদর হাসপাতালে গিয়ে শরীর থেকে কয়েকটি বুলেট বের করা হয়। পরে ছাত্র শিবিরের সহযোগিতায় ফেনীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার শরীর থেকে আরো কিছু বুলেট বের করেন। বর্তমানে আমার বাম হাত ও বাম পায়ে দুই বুলেট রয়ে গেছে। অপারেশনের মাধ্যমে বুলেট দুইটি বের করা সম্ভব হলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছেন এর ফলে আমি প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারি।

এ ব্যাপারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি এমদাদ হোসেন জানান, মোর্শেদ আমাদের সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ নেয়। ৪ আগস্ট সে আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিল। সরকার পতনের পর ছাত্র আন্দোলনে আহতের সহযোগিতার জন্য সরকারিভাবে যে তালিকা করা হয়েছে সে তালিকা মোর্শেদের নাম থাকলেও এখনো সে কোন আর্থিক সহযোগিতা পায়নি। সরকারিভাবে তার চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে হবে।

মোর্শেদের পিতা জানান, ইতোমধ্যে সন্তানের চিকিৎসার জন্য তিনি ৫০ হাজার টাকা ঋণ করেছেন।