ফেনী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক এনামুল হক খোন্দকার। দায়িত্বগ্রহণের পর ফেনী কলেজের সংকট, উন্নয়ন ও পরিকল্পনাসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলে দৈনিক ফেনী।
দৈনিক ফেনী : ফেনী কলেজে যোগদানের পর কেমন লাগছে ?
অধ্যক্ষ : ফেনী কলেজের দায়িত্ব পেয়ে ভালো লাগছে। এটি ফেনীর ঐতিহ্যবাহী কলেজ। নিজ জেলার এমন একটি কলেজের দায়িত্ব নেয়া গর্বের বিষয়।
দৈনিক ফেনী : দায়িত্ব নিয়ে প্রথম লক্ষ্য কি হবে আপনার?
অধ্যক্ষ : এখানে এসে জানতে পেরেছি একাডেমিক ও অবকাঠামোগত নানা সমস্যা আছে। কলেজে ২২ হাজার শিক্ষার্থী কিন্তু পর্যাপ্ত ক্লাস রুম নেই যার জন্য কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণ খুব বেশি প্রয়োজন, সেটি নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করব।
দৈনিক ফেনী : শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার পরিকল্পনা কি?
অধ্যক্ষ : ফেনী কলেজে শিক্ষক ডরমেটরি নেই, দেশের অনেক ছোট কলেজেও শিক্ষকদের থাকার জন্য ডরমেটরি আছে। সেটি নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করব। ইতোমধ্যে উপাধক্ষ্যর সাথে সাক্ষাত হয়েছে। সমস্যাগুলো নিয়ে শিক্ষকদের সাথে বসব। ছাত্র-শিক্ষকদের কল্যাণে সকল সমস্যা সামাধানের উদ্যোগ নেব খুব দ্রুত।
দৈনিক ফেনী : কলেজে শিক্ষক সংকট প্রবল, এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন কিনা?
অধ্যক্ষ : অনেক বড় কলেজ তবে শিক্ষক সংকট প্রবল। প্রয়োজন অনুপাতে শিক্ষক অনেক কম তা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে জানানোর চেষ্টা করব যাতে পদ সৃষ্টি করে শিক্ষক জনবল বাড়ানো যায়।
দৈনিক ফেনী : শিক্ষার্থীদের বহুদিনের দাবি কলেজে বাস সার্ভিস চালুকরণ, এ বিষয়ে কি ভাবনা আপনার?
অধ্যক্ষ : ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাস সার্ভিস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সকল সরকারি কলেজে এ সুবিধা থাকা উচিত। দায়িত্ব নিয়েছি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় যা উদ্যোগ তা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ফেনী : কলেজে বিভিন্ন ক্লাবের কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন, এসব বিষয়ে আপনার ভাবনা কি?
অধ্যক্ষ : ফেনী কলেজকে সবদিকে সাফল্যমন্ডিত করতে সবধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিজ্ঞান ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, রোভার বিএনসিসিসহ যা আছে সবকিছু যাতে সুন্দরভাবে চলে সেটিই চেষ্টা করব।
দৈনিক ফেনী : ফেনী কলেজে সম্প্রতি লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয়ে আপনার ভাবনা কি?
অধ্যক্ষ : আমাদের জায়গা থেকে ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি যাতে না করা হয় সে বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হবে সবসময়। অনেক কিছু আমার হাতে থাকবে না। এখন পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাতে হয় সেগুলোও রাজনৈতিক দলগুলোর খেয়াল রাখা উচিত। কারন ছাত্র-জনতার প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে সুফল আনা সম্ভব হবে না, এমন কি নির্বাচনগুলোতেও ছাত্র রাজনীতির তেমন প্রভাব নেই। আমরা ফেনী কলেজে সেগুলোতে দৃষ্টি রাখব। এসময় দায়িত্বপালনে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গত ৯ অক্টোবর ফেনী কলেজের অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব নেন ১৪ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা অধ্যাপক এনামুল হক খোন্দকার। তিনি ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের পশ্চিম দেবপুর গ্রামের সন্তান। ফেনী আলীয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম ও পরে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৩ সালে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগে প্রভাষক পদে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে সহকারি অধ্যাপক পদোন্নতি পেয়ে নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ ও রাজধানীর কবি নজরুল কলেজে শিক্ষকতা করেন। পরে সহযোগি অধ্যাপক হিসেবে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজে বদলী হন। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শক পদেও তিনি কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সাতকানিয়া সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ ছিলেন। এরপর ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ফেনী কলেজে যোগদানের আগ পর্যন্ত রাঙামাটি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক।