দেড়মাস আগেই স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ধকল এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ফেনীর মানুষরা। তবুও ‘মানুষ মানুষের জন্য’- এ বিশ্বাসে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার খবর শুনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। বন্যার্ত উত্তরবঙ্গের মানুষের সহায়তার জন্য ফেনীতে গণত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বিত উদ্যোগে শহরের মিজান রোডের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের সামনে ‘উত্তরবঙ্গের পাশে ফেনী’র ব্যানারে খাদ্য, ঔষধ, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করছেন ফেনীর সকল শ্রেণিপেশার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে গত রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে এক হাজার মানুষের জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে শেরপুর ও ময়মনসিংহ গেছেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের আগস্টের শেষের দিকে দিকে ভারতের উজানের ঢল ও ভারি বর্ষনে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয় ফেনীতে। সেসময় বন্যায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার ও মানবিক সহায়তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষরা ফেনীতে ছুটে আসেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে উত্তরবঙ্গের বন্যার্তদের সহযোগিতায় জেলাব্যাপী গণত্রাণ সংগ্রহ শুরু করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। গত কয়েকদিনে প্রায় ১০ লাখ টাকার ত্রাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরামে ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এ কার্যক্রমের সমন্বয়ক ইমন-উল হক বলেন, গত দেড় মাস পূর্বে ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এ জনপদের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন তারা নিজেরাই বন্যার্ত। আমরাও সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে শেরপুর ও ময়মনসিংহে আমাদের টিম ত্রাণ ও নগদ অর্থ নিয়ে পৌঁছে গেছে। আগামী কাল-পরশুর মধ্যে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে আরেকটি টিম রওনা দেবে। এছাড়া ফেনীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনেও আমরা কাজ করছি।

এ কার্যক্রমের আয়োজকদের একজন ওসমান গনি রাসেল বলেন, শেরপুর ময়মনসিংহের জন্য শুকনো খাবার, ঔষধ, স্যালাইন, নারীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থ পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি জেলায় আমাদের টিম পাঠানো হবে। উত্তরবঙ্গের বন্যার্তদের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ফেনীর নানা শ্রেণি পেশার মানুষরা।

উল্লেখ্য, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীতে পানি বেড়ে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, শেরপুর ময়মনসিংহসহ আশপাশের অনেক জেলায় বন্যায় কবলিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া পানিবন্দী হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।