গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল, তখন ফেনী থেকে চট্টগ্রামে চাচার বাসায় বেড়াতে যান সাইফুল ইসলাম আরিফ। সেখানেই জুলাইয়ের শেষদিকে নিয়মিত অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে। ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের সিআরবিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর ও গুলিতে আহত হন সাইফুল। গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে দীর্ঘ ১ মাস ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছে দাগনভূঞা উপজেলার এ তরুণ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। নিহত সাইফুল দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কৌশল্যা এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, সাইফুল দাগনভূঞার দরবেশের হাট ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা আলতাফ হোসেন এলাকায় কৃষি কাজ করেন। পরিবারে এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সাইফুল সবার বড় ছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জেঠার বাসা থেকে গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশ নেন সাইফুল। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর ও গুলিতে আহত হন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১ মাস ১৫ দিন চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সোমবার সকাল ৭টার দিকে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় প্রাণ নিভে যায় সাইফুলের।
নিহতের চাচা আমজাদ হোসেন দৈনিক ফেনীকে বলেন, সাইফুল গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগেও টানা ৪-৫ দিন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের লোকজন তাকে বেধড়ক মারধর করেছে। পরবর্তী মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে। অনেক চেষ্টা করেও শেষপর্যন্ত ভাতিজাকে বাঁচাতে পারলাম না।
ঢাকায় জানাজা শেষে দাগনভূঞার নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জুলাই ও আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীতে নয় জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ঢাকায় অবস্থান করা ফেনীর দুজন ও চট্টগ্রামে অবস্থান করা আরও দুজন নিহত হয়েছে।