ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ভারতের এভাবে বাঁধ খুলে দেওয়া উচিত হয়নি। যদিও তারা বিষয়টি স্বীকার করেনি। এ বিষয়ে যৌথ নদী কমিশন, কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য ভারতের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ফেনীতে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
ফেনীতে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, এখানে যেহেতু প্রতিবছর বন্যা হয় সেজন্য স্থায়ী একটি সমাধান প্রয়োজন। ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে বাঁধগুলো কিভাবে সংস্কার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, এখন আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমে জোর দিচ্ছি। প্রাথমিকভাবে গৃহনির্মাণে সবার চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি যাদের শিক্ষা সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে তা দ্রুত সরবরাহ করতে হবে।
পার্বত্য এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কোথাও সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি। সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি জায়গায় সমস্যা হয়েছিল। সাময়িকভাবে কিছু জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, কিন্তু সেটিকে অতিরঞ্জিত করে বলা হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি এবং এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বা কোনো এলাকায় দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট বন্ধ ছিল, এমন প্রমাণও কেউ দেখাতে পারবে না।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়টি সত্য নয়। এ বিষয়ে সেখানের জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্পূর্ণ সত্যতা জেনে নেওয়ার অনুরোধ রইল।
পরিস্থিতির সংকট করার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা রয়েছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যা আমাদের অভ্যন্তরীণভাবেই সমাধান করতে হবে। এ ব্যাপারে আজকে কয়েকজন উপদেষ্টা সেখানে যাচ্ছেন। অভ্যন্তরীণভাবে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। দেশ সংকটকালীন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশকে অশান্ত করার পরিকল্পনা অনেকেরই রয়েছে। নানাভাবে পরিস্থিতির সংকট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে ছাগলনাইয়ায় আন্ধারমানিক এলাকা ঘুরে ঘুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। পরে ফুলগাজীর জগতপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে আনন্দপুরে শহীদ ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
এসময় ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।