ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা গুলি-ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এবার ৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আন্দোলনে আহত মো. তাজিম উদ্দিন নামে ফেনী আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। তার বাড়ি দাগনভূঞা উপজেলা পূর্ব চন্দ্রপুর গ্রামে। তার করা মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে আসামী উল্লেখ করা হয়েছে।

এ মামলার উল্লিখিত ৯ নম্বর আসামি জিয়া উদ্দিন ওরফে ডালিমকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। ডালিম ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ কাজিরবাগ গ্রামের বাসিন্দা এবং এলাকায় একজন বিএনপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি বিএনপি দলীয় সাবেক সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানুর ছোট ভাই। তবে তিনি ফেনী-২ আসনের (সদর), সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীও ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে কাজীরবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করেন, গত ৪ আগস্ট সকাল থেকে ফেনীর মহিপাল উড়ালসেতুর নীচে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার সমাবেশ চলছিল। তিনি ও তার আরও কয়েকজন বন্ধু ওই সমাবেশে অংশ নেন। ওই দিন দুপুরের দিকে আওয়ামী লীগের এক দল সশস্ত্র দূর্বৃত্ত আগ্নেয়াস্ত্রসজ্জিত হয়ে ছাত্র জনতা সমাবেশে হামলা করে। ওই হামলায় নয়জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়। তিনি নিজেও গুলিতে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর হামলাকারীরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে কুপিয়ে মারা গেছেন মনে করে ফলে চলে যায়। বিকেলে তার বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি ফেনী সদর হাসপাতালে ও আন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নির্বিচারে গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ফেনী মডেল থানায় সেদিনের হত্যাকাণ্ডে ৮টি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে আহতদের মধ্যে একাধিক ছাত্র জানিয়েছে মহিপালে নিহতের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে।