ফেনীতে গতকয়েক দিন ধরে বেড়েছে লোডশেডিং। হঠাৎ করে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। দিনে–রাতে সমানতালে বিদ্যুত বিভ্রাটে ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। এছাড়া হাসপাতালে থাকা রোগী, বয়োবৃদ্ধসহ কষ্ট বেড়েছে শিশুদের।
এ ব্যাপারে বিদ্যুত বিভাগ বলেছে, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ৪৫ মেগাওয়াট কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২৭ মেগাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে ১৮ মেগাওয়াট কম পাওয়া গেছে। যার কারণে ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে বলে জানা যায়।
লাগামহীন লোডশেডিংয়ের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলছেন, গত কিছুদিন ধরে গরমের সাথে লোডশেডিং মাত্রা অনেকটা বেড়েছে। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় পরিস্থিতি।
ফেনীর উত্তর ডাক্তার পাড়া মোড়ের রিয়াজ উদ্দিন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা দৈনিক ফেনীকে বলেন, কিছুদিন ধরে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেক বেড়েছে। বিদ্যুত প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় যাচ্ছে। বাসায় বয়োবৃদ্ধ মা-বাবা ও বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে গৃহিণীরাও বিরক্তি প্রকাশ করছেন। গরমে ঘরে অবস্থান করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। চার্জার ফ্যান দিয়ে ঘাটতি পূরণ করতে পারছেন না তারা। পৌর শহরের শান্তি কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া আক্তার দৈনিক ফেনীকে বলেন, গরমের সাথে বিদ্যুতের যে অবস্থা চার্জার ফ্যান দিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়। লোডশেডিংয়ের কারণে চার্জার ফ্যানও চার্জ দেওয়া যাচ্ছে না।
ফটোস্ট্যাট দোকানের ফরিদ হোসেন নামের এক দোকানী দৈনিক ফেনীকে বলেন, বন্যার কারণে দোকান বন্ধ ছিল। দোকান বন্ধের কারণে ইনকাম কমে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দোকান খুলে যে ব্যবসাটা আবার ঘুরাবো লোডশেডিংয়ের কারণে সে পরিস্থিতি নেই। একই সুরে কথা বলেছেন আরমান নামের আরেক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, বন্যার সময় ফ্রিজে থাকা আইসক্রীমসহ অন্যান্য জিনিসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে৷ নতুন করে এখন দোকানে আইসক্রিমজাতীয় পণ্যগুলো তুলেছি কিন্তু লোডশেডিং যে হারে বাড়ছে আবার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছি।
লোডশেডিং বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ফেনী বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর হোসেন রিয়াজ দৈনিক ফেনীকে বলেন, বিদ্যুতের বরাদ্দ যেভাবে পাচ্ছি সে অনুযায়ী গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে। পিডিবি এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তাপমাত্রা বেড়েছে যার কারণে বিদ্যুতে চাহিদাও বেড়েছে। এছাড়া বন্যার কারণে যেসব এলাকায় বিদ্যুতের লাইনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলো মেরামত করতে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় বলে জানান তিনি।