ফেনীতে চট্টগ্রামের সোনা ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাসের ২০টি সোনার বার লুটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) গ্রেফতার করা হয়েছে। ফিরোজ আলম (৫৫) নামের ওই এসআই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত। ব্যবসায়ীর সোনা লুটের সংশ্লিষ্টতায় তাঁর নাম আসার পর অসুস্থতার ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান ফিরোজ।
গতকাল বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ফিরোজ আলম ছিলেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি অভিযুক্ত ফেনী ডিবির কর্মকর্তাদের তথ্য দিয়েছিলেন এবং তার দেয়া তথ্যমতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, তার বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে ফেনী পুলিশ ব্যুরো আব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযান চালিয়ে ফিরোজকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মনপুরায় গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে ফেনীর ফতেহপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাসের গাড়ির গতি রোধ করেন ফেনী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কর্মকর্তারা। এ সময় নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আটকে রেখে গোপালের সঙ্গে থাকা ২০টি সোনার বার লুট করা হয়।
এ ঘটনায় ১০ আগস্ট ফেনী সদর মডেল থানায় ডিবির পরিদর্শক সাইফুল ইসলামসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ডাকাতির মামলা করেন ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস। এতে লুট হওয়া ২০টি সোনার বারের দাম প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ৪ হাজার ৫৯৭ টাকা উল্লেখ করা হয়।
ওই দিন রাতেই ফেনী থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডিবির পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন, নুরুল হক ও মিজানুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অভিজিৎ বড়ুয়া ও মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের বাসা থেকে ১৫টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। বাকি পাঁচটি বার এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
ফেনী ডিবি পুলিশের ছয় কর্মকর্তাকে আদালতের আদেশে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বর্তমানে তাঁরা ছয়জন ফেনী কারাগারে আছেন। ইতিমধ্যে মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে ফেনী থানা থেকে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়েছে।