শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে সোমবার (১৫ জুন) পর্যন্ত ৮৪জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯ জনের করোনা পজিটিভ। সোমবার বিকালে এসব তথ্য জানান ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজী।

তিনি বলেন, তাদের বেশির ভাগেরই দরকার হাই ফ্লো অক্সিজেন সেবা।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত তথ্যমতে, আজ পর্যন্ত ফেনীতে শনাক্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫১৪জন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিনদিনে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ফেনীর মোট ৩২৯টি নুমনা পরীক্ষার করা হয়েছে। এরমধ্যে মোট ১০৩টি নমুনা পজিটিভ এসেছে। সেই হিসেবে ৩দিনে পরীক্ষিত মোট নমুনার প্রায় ৩১ শতাংশ পজিটিভ এসেছে। এরমধ্যে গত শনিবার ফেনীতে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ৫৫জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছিল।

একদিকে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকা শনাক্তের সংখ্যা, অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রায় প্রতিদিনই শ্বাসকষ্ট নিয়ে কোন না কোন রোগী মারা যাচ্ছেন। গত দুইদিনে ফেনীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে দুইজন এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত ফেনীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১জন।

পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে কি অপেক্ষা করছে, তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন ডাঃ আবুল খায়ের মিয়াজী।

হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারে ক্রমাগত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

উল্লেখ্য ইতোমধ্যে, করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ফেনীর সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাই ফ্লো সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ৪০ শয্যা এবং উপজেলা পর্যায়ে দাগনভূঞায় ১০ শয্যার দেশের প্রথম হাই ফ্লো অক্সিজেন সেবা চালু হয়েছে।

এদিকে ফেনীতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক চিহ্নিত ৮টি এলাকাকে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করায় সেগুলো লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বাজার ও দোকানপাট খোলা-বন্ধের উপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে সদরে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে ১৮২জন। শনাক্তকৃত সংখ্যার ভিত্তিতে জেলায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলায়। উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২০জন শনাক্ত হয়েছে। এরপরে রয়েছে সোনাগাজীতে ৮৪জন, ছাগলনাইয়ায় ৬২জন, পরশুরামে ২৮জন ও ফুলগাজীতে ২৯জন।