সম্প্রতি ফেনীতে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বহুমুখী। ফেনী শহরের বাসাবাড়িতে বন্যায় ক্ষতির অন্যতম বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটার নষ্ট হওয়া। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অভিযোগ, বন্যায় সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আবার নগদ টাকায় প্রিপেইড মিটার কেনা কষ্টসাধ্য এবং অমানবিক। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, নগদ টাকা কিনতে হলে প্রতি মিটারের দাম পড়ছে ৮ হাজার টাকা। অনৈতিক লেনদেনে অনেক অল্প টাকাতেই প্রিপেইড মিটার পাওয়ার ঘটনা রয়েছে।

গ্রাহকদের বিভিন্নরকম অভিযোগের প্রেক্ষিতে দৈনিক ফেনী প্রতিবেদকের কথা হয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ফেনীর বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদের সাথে। নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ৪ হাজার ৭০০ প্রিপেইড মিটারের মধ্যে গ্রাহকের টাকায় কেনা হয়েছিল ১ হাজার ৫০০ প্রিপেইড মিটার। নষ্ট হয়ে যাওয়া মিটারের মধ্যে ২ হাজার ৮০০ প্রিপেইড মিটার এডিপি ও ৪০০টি গ্রাহককে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছিল। শুধু ১ হাজার ৫০০ গ্রাহককে নতুন করে টাকা দিয়ে প্রিপেইড মিটার কিনতে হবে।

ঢাকায় কর্মরত সাংবাদিক কেফায়েত শাকিলের পরিবার ফেনী শহরের রামপুরে বসবাস করছেন। বন্যায় ঘরের দুটি প্রিপেইড মিটার নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান। নতুন মিটার পেতে ৮ হাজার করে ১৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। বন্যার পর একসঙ্গে এত টাকা খরচ করা কষ্টসাধ্য। তাছাড়া এই বন্যায় ক্ষতির পর বিদ্যুৎ বিভাগের মানবিক হওয়া উচিত ছিল। নষ্ট মিটার গ্রাহক পর্যায়ে বিনামূল্যে বিতরণ বা মাসিক হারে চার্জ কেটে আদায় করা যেত। কিন্তু এ বিভাগটি গ্রাহকদের প্রতি মানবিকতা দেখাতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে মিটার কেনার কথা শোনা যাচ্ছে।

নগদ টাকায় মিটার কেনা প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, দেড় হাজার গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার নষ্ট হওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

বিপিডিবি ফেনী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফেনীতে ৮৬ হাজার ৪০০ গ্রাহকের মধ্যে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন ৫৮ হাজার ৩৮৯ এবং পোস্টপেইড মিটার ব্যবহার করেন ২৮ হাজার ১১ জন গ্রাহক। এক বছর আগেও গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজার। ২০১৫ সাল থেকে ফেনীতে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার শুরু করা হয়।

তবে বিদ্যুৎ বিভাগের সেবা প্রসঙ্গে গ্রাহকরা সন্তুষ্ট নন। তারা বলছেন, গ্রাহকের সংখ্যা বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি। সুবিধা বাড়ার কথা বলে প্রিপেইড মিটার লাগানো হলেও বেড়েছে গ্রাহকদের দুর্ভোগ।